যশোরের কেশবপুর উপজেলার মুলগ্রামের কিশোর আনিন নাঈম (১৫) হত্যা রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সদস্যরা হত্যাকান্ডে জড়িত তিনজনকে আটক করেছে।
আটককৃতরা হলো, যশোরের কেশবপুর উপজেলার হাড়িয়াঘোপ গ্রামের আবুল কাশেম খাঁর ছেলে নুরুজ্জামান খাঁ, একই এলাকার মুনসুর মোড়লের ছেলে শিমুল হোসেন ও মৃত গহর আলী মোড়লের ছেলে আতিয়ার রহমান। মঙ্গলবার(১ ফেব্রুয়ারি) রাতে তাদেরকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৭টায় কেশবপুর উপজেলার মুল গ্রামের মশিয়ার রহমানের ছেলে আনিন নাঈমের মৃতদেহ ভান্ডারখোলা গ্রামের ইকবালের মোড় থেকে উদ্ধার হয়।
আনিন নাঈমের পরিবারের সদস্যরা গ্রামবাসীর কাছ থেকে জানতে পারেন, ওইদিন ভোর সাড়ে ৫টায় আনিন নাঈম কেশবপুরের হাড়িয়াঘোপ গ্রামের আব্দুস সোবহান এর বাড়ি হতে একটি বাইসাইকেল চুরি করে পালানোর সময় লোকজনের কাছে আটক হয়। গণপিটুনীতে আনিন নাঈম মারা যায়। এ ঘটনায় নিহত কিশোরের পিতা মশিয়ার রহমান বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কেশবপুর থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত শেষে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
মামলার বাদির নারাজির প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালতের বিচারক মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই যশোরকে নির্দেশ দেন। পিবিআই তদন্তে নেমে আনিন নাঈম হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত নুরুজ্জামান, শিমুল হোসেন ও আতিয়ার রহমানকে আটক করে। মঙ্গলবার রাতে তাদেরকে বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পিবিআইয়ের কর্মকর্তা জানতে পারেন নিহত আনিন নাঈম ইটভাটার শ্রমিক ছিলেন। ইটভাটায় কাজের সুবাদে হাড়িয়াঘোপ কারিকরপাড়ার আসাদুর রহমান এর সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে। এরই প্রেক্ষিতে আনিন নাঈম প্রায়ই আসাদুর রহমানের বাড়িতে আসা যাওয়া করতো।
ঘটনার দিন ভোর ৫টায় আনিন নাঈম আসাদুলের বাড়ি হতে তার নিজ বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে কারিকরপাড়ার তৌহিদুর রহমানের বাড়ির সামনে পৌছালে স্থানীয় লোকজন চোর চোর বলে চিৎকার শুরু করে। তখন নাঈম জীবন বাচাঁতে মাঠের দিকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় গ্রামবাসী তাকে ধরে বেধড়ক মারপিট করে। এতে নাঈম এর বুকের পাজরের হাড় ভেঙ্গে যায়। তাকে ইট দিয়ে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই নাঈম মারা যায় বলে আটককৃতরা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।
খুলনা গেজেট/ এস আই