কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য গরু দিয়ে হাল চাষ। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ছোঁয়াই হারিয়ে গেছে এই চিরচেনা দৃশ্যটি। কাক ডাকা ভোরে কৃষকরা গরু ও কাঁধে লাঙল-জোয়াল নিয়ে বেরিয়ে পড়তো মাঠের জমিতে হালচাষ করার জন্য। বর্তমানে আধুনিকতার স্পর্শে ও বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে কৃষকদের জীবনে এসেছে পরিবর্তন। আর কৃষিতে লাঙল জোয়ালের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয় ইঞ্জিন চালিত পাওয়ার ট্রিলার।
উপকূলীয় অঞ্চল খুলনার কয়রায় ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করে সংসার চালান খালেক সানা (৭২)। মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদের সামনে বোরো চাষে লাঙল জোয়াল ও ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করার এমন দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে দেখছেন পথচারী।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের উত্তর মদিনাবাদ গ্রামে তার বসবাস। জীবিকার তাগিদে আগে ঘোড়ার গাড়ি চালাতেন, বয়সের ভার আর ঘোড়ার গাড়ির কদর না থাকায় জীবিকা সংকটে পড়েন তিনি। তার দুই পুত্র সন্তান ও এক মেয়ে বিয়ের পরে আলাদা সংসার শুরু করেন। তখন খালেক সানা ও তার স্ত্রীর জীবন সংগ্রামে পাঁচ বছর আগে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ শুরু করেন। তিনি বোরো ও আমনের মৌসুমে ৭ শত টাকা করে প্রতি বিঘা জমি হাল চাষ করেন। প্রতি দিন ঘোড়া দিয়ে দেড় বিঘা জমি হাল চাষ করতে পারেন তিনি। এভাবে হাল চাষ করে সংসার চালান খালেক সানা।
ঘোড়া দিয়ে হালচাষের দৃশ্য দেখতে আশা মোস্তফা শফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলা পরিষদে একটা কাজে এসে দেখি ঘোড়া দিয়ে লাঙল চাষ করছে। আধুনিকতার ছোয়ায়। উপকূলীয় অঞ্চলে হারিয়েছে গরু মহিষ দিয়ে হাল চাষ। তবে এমন দৃশ্য দেখে সবাই মুগ্ধ হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, আধুনিকতার ছোয়ায় এখন যান্ত্রিক উপায়েই জমি চাষ করে কৃষকরা। তবে এ উপজেলায় ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করার দৃশ্য দেখা যায় না। লাঙল দিয়ে চাষ করলে লাঙলের ফালা মাটির নিচে বেশি যাওয়ায় জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। তবে কৃষি বিভাগ সবসময় আধুনিক মানের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে চাষাবাদ করার জন্য উৎসাহ দিচ্ছে। এতে করে কৃষকের সময় ও অর্থ কম খরচ হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম