জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলা ও উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। শনিবার (২২ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি চত্ত্বরে সকাল ১০ টায় বেসরাকরী উন্নয়ন সংস্থা ‘লিডার্স’ এবং নাগরিক সংগঠন ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ আয়াজিত এক মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে এই দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে দেশের উপকূলের জনজীবনে সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এরপর করোনা সংক্রমণ ও প্রতি বছরের প্রাকৃতিক দূর্যোগ এই সংকট আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এমতাবস্থায় টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ, সুপেয় পানির নিশ্চিয়তাসহ উপকূলের জীবন-জীবিকা রক্ষায় বিশেষ অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন।
সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র-এর সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তৃতা করেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের আমিনুর রসুল বাবুল, নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ, গ্রীণ ক্লাব অব বাংলাদেশ (জিসিবি) সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র মিহির বিশ্বাস, সাবেক ছাত্র নেতা রফিকুল ইসলাম সুজন, সচেতন সংস্থার সাকিলা পারভীন, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, লিডার্সের শফিকুল ইসলাম, মৃত্তিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার খাদিজা খানম, শহীদ আলীম সাহিত্য সংসদের শেখ আব্দুল হাসিব, নদী বাঁচাও আন্দোলনের মোঃ আফসার প্রমূখ।
মানববন্ধন ও সমাবেশে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় অভিযোজন প্রক্রিয়া বাড়াতে হবে। আগামীতে সরকারের প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে দূর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের মানুষের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে জরুরী তহবিল গঠন ও বাঁধ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকারকে সম্পৃক্ত করতে হবে। সুপেয় পানির স্থায়ী সমাধান করতে হবে।
মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা বলেন, জনগণের আকাঙ্খাকে গুরুত্ব দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দু’টি মেগা প্রকল্প নিয়েছে। কিন্তু এখনো সেই প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু হয়নি। জনস্বার্থে দ্রত ওই প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শুরু করতে হবে। উপকূলের টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও জীবন-জীবিকা রক্ষায় সরকারের নেওয়া অন্যান্য প্রকল্পগুলো দ্রুত অনুমোদন দিতে হবে। সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সমন্বয় এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তারা।
সমাবেশে উপকূলের উন্নয়নে উপকূলীয় বোর্ড় গঠনের দাবি জানানো হয়। এছাড়া ঝড়-ঝঞ্ঝা ও ভূমিক্ষয় রোধে উপকূলে ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি গ্রহণ এবং সবুজবেষ্টনী গড়ে তোলার পাশাপাশি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
সাতক্ষীরার শ্যামনগরস্থ বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন লিডার্সের প্রতিনিধি পরিতোষ বৈদ্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য নিশ্চিত করা হয়।