খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৭ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান গ্রেপ্তার
  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১২২৫
  পোল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত হিসেবে খোরশেদ আলমের নিয়োগ বা‌তিল : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
  সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

দেবহাটায় ১৩শ’ বিঘা সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে কঠোর অবস্থানে প্রশাসন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার খলিশাখালীতে ভূমিহীন কর্তৃক দখলকৃত ১৩২০ বিঘা সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে কঠোর অবস্থানে উপজেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই খলিশাখালী থেকে ভূমিহীন নামধারী ভূমিদস্যুদের চলে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইন অমান্য করলে তাদেরকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে খলিশাখালীতে পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার খলিশাখালিতে দীর্ঘদিনের ভোগদখলে থাকা ব্যক্তিদের হটিয়ে ১৩’শ বিঘা সম্পত্তির মধ্যে থেকে কমপক্ষে এক হাজার বিঘা বিলান জমি ও মৎস্য ঘের দখল নেয় স্থানীয় ভূমিহীনরা। খলিশাখালির বিস্তীর্ণ এসব জমি সরকারি সম্পত্তি উল্লেখ করে গত কয়েক যুগ ধরে তা বন্দোবস্তের দাবি করে আসছিল স্থানীয় ভূমিহীনরা। একপর্যায় গত বছর ১১ সেপ্টেম্বর শনিবার ভোররাতে খলিশাখালিসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের অন্তত ৫শ’ ভূমিহীন পরিবার ওই জমির দখল নেয়।

এদিকে দেবহাটার খলিশাখালীতে অবস্থানরত ভূমিদস্যুদের উচ্ছেদ ইস্যু নিয়ে বুধবার (১৯ জানুয়ারি) উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিস্তারিত অলোচনা করা হয়। সভায় জবরদখলকৃত খলিশাখালীর ১৩২০ বিঘা (৪৩৯.২০ একর) জমি ভূমহীন নামধারী ভূমিদস্যুদের কবল থেকে দখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় খলিশাখালীর দখলদারিত্বের মূল হোতা ও বহু মামলার আসামী ভূমিদস্যু আনারুল, রবিউলসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীদের পর্যায়ক্রমে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নেয়ার বিষয়ে সুপারিশ করেন বক্তারা।

এ বিষয়ে দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি বলেন, খলিশাখালীর ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীরা যেকোন মুহূর্তে দেবহাটা উপজেলাতে ২০১৩ সালের মতো নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। সেজন্য তাদের উচ্ছেদে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

দেবহাটা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবর রহমান বলেন, খলিশাখালী জনপদ দিনদিন সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু ও দাগী অপরাধীদের নিরাপদ আস্তানায় পরিণত হচ্ছে। অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠার আগেই তাদেরকে সমূলে উপড়ে ফেলতে হবে। ইতিমধ্যেই খলিশাখালীর ভূমিদস্যুরা পার্শ্ববর্তী রাঙাশিষাসহ আরোও কয়েকটি এলাকা দখলে নেয়ার পরিকল্পনা করছে। উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখতে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অবিলম্বে খলিশাখালী থেকে এসব ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের উচ্ছেদ করে গোটা সম্পত্তি প্রকৃত মালিকদের অনুকূলে ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, খলিশাখালী নামীয় ১৩২০ বিঘা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির মৎস্য ঘের গেল বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ভোররাতে জবরদখল করে নেয় অস্ত্রধারী ভূমিদস্যুরা। দখল পরবর্তী ঘেরগুলো থেকে মাছসহ অন্যান্য সম্পদ লুট করে ভূমিদস্যুরা। বর্তমানে জবরদখলকৃত প্রায় ৩শ’ মালিকের গোটা সম্পত্তি বেআইনিভাবে ভূমিদস্যুরা তাদের পৈত্রিক জমির মতো ভাগ বাটোয়ারা এবং বিক্রয় করে চলেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের আলোকে তিনি বলেন, খলিশাখালীতে অবস্থানরত ভূমিদস্যুরা অধিকাংশই বহিরাগত। সেখানে বর্তমানে বেশ কয়েকটি অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনী অবস্থান নিয়েছে। অস্ত্রবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক বেচাকেনা, জুয়ার আসরসহ সব ধরনের অপকর্ম বর্তমানে খলিশাখালীতে সংঘটিত হচ্ছে। যেকোন মুহূর্তে সেখানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। খলিশাখালীতে অবস্থানরত ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী বাহিনীগুলো ক্রমশ উপজেলা জুড়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে দেবহাটাকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। সেজন্য প্রতিদিন খলিশাখালীতে পুলিশের টহল অব্যাহত থাকবে।

নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী আরও বলেন, ভূমিদস্যুরা দিনদিন যেন খলিশাখালীকে দেবহাটা থেকে বিচ্ছিন্ন আরেকটি আজব রাজ্য বানিয়ে ফেলছে। সেখানে আইনের শাসন কমে যাচ্ছে এবং দিনদিন প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে সন্ত্রাসী বাহিনী ও ভূমিদস্যুরা। ইতোমধ্যেই খলিশাখালী থেকে ভূমিদস্যুদের চলে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইন অমান্য করলে তাদেরকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

তিনি বলেন, খলিশাখালীর ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী বাহিনী গুলোর মদদদাতাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে, প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে প্রশাসন।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!