খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কুমিল্লায় ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার ৫ যাত্রী নিহত
  মানবতাবিরোধী অপরাধ : চিফ প্রসিকিউটর দেশে না থাকায় ফখরুজ্জামান ও সাত্তারের জামিন শুনানি ২ সপ্তাহ পেছাল আপিল বিভাগ
  আজ থেকে জাতীয় ছাত্র সংহতি সপ্তাহ শুরু
  অ্যান্টিগা টেস্ট: শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ২২৫ রান, হাতে ৩ উইকেট

সাতক্ষীরার খানপুরে অস্ত্র ঠেকিয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী অপহরণের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় জান্নাতুল ফেরদৌস লিজা (১১) নামের ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর পিতা মিজানুর রহমান বাদি হয়ে রোববার (১৬ জানুয়ারি) রাতে সাতক্ষীরা সদর থানায় এজাহার দায়ের করেন।

এজাহারে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খানপুর গ্রামের মৃত শওকত আলী সরদারের ছেলে মিজানুর রহমান বলেছেন, তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস লিজা চলতি ২০২২ শিক্ষাবর্ষে খানপুর ছিদ্দীকিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসায় ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। মাদ্রাসায় যাতায়াতের সময় একই গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে আজমির হোসেন (২০) ওই শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। ১৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে আজমির হোসেনসহ একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে খলিল (৪০), আব্দুল জব্বারের ছেলে আনারুল (৩৬), মৃত ছাদেক সরদারের ছেলে মফিজুল (৩৪) ও কবির (৩৬)সহ কয়েকজন দু’টি নাম্বার বিহীন মোটর সাইকেলে মিজানুর রহমানের বাড়ির সামনে এসে পিস্তল ঠেকিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস লিজাকে জিম্মি করে ফেলে। এসময় লিজার চিৎকারে তার মা হালিমা খাতুন, চাচী ফরিদা খাতুনসহ অন্যরা এগিয়ে গেলে তাদেরকে মারপিট করে লিজার গলায় ছুরি ও পিস্তল ঠেকিয়ে জোরপূর্বক মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। তাকে জোরপূর্বক বাল্যবিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। এঘটনার পর এলাকায় একরকম ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলে জানান স্থানীয়রা।

এবিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কবির বলেন, এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর পিতা একটি এজাহার জমা দিলে সাথে সাথে একজন এসআইকে দায়িত্ব দিয়ে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। মেয়েটিকে উদ্ধার ও ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে রয়েছে। অপহরণকারিদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

বিষয়টি সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরাকে জানানো হলে তিনিও স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বরের মাধ্যমে খোঁজ-খবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

এদিকে, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খানপুর গ্রামে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৭ম শ্রেণি পড়ুয়া এক কিশোরীর বাল্যবিয়ের পর এবার সদ্য ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে অপহরণপূর্বক জোর পূর্বকভাবে বাল্যবিয়ে দেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযোগের আঙ্গুল স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ইব্রাহিম খলিলের দিকে। তিনি ছেলে পক্ষের পক্ষাবলম্বন করে এ বাল্যবিয়ের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। ইব্রাহীম খলিল স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য।

তবে ইব্রাহিম খলিল ঘটনার সাথে তার সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি এখন মেম্বার নই। আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সত্য নয়।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহখানেক আগে খানপুর ছিদ্দীকিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক মুজিবর রহমানের সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে মার্জিয়া সুলতানা (১৩)কে বিয়ে দেওয়া হয় একই গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে মাহফুজুর রহমানের সাথে। মাহফুজুর রহমানের বয়স ১৫ বছর। স্থানীয় সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের ম্যানেজ করে নাকি ওই কিশোর-কিশোরীর বাল্যবিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয় ইউপি মেম্বর জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ঘটনা শোনামাত্রই পুলিশকে জানিয়েছি। গ্রাম স্থানীয় পুলিশ পাঠিয়ে খোজ-খবর নিয়েছি। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সার্বিক এসব বিষয়ে খানপুর ছিদ্দীকিয়া সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আব্দুল আহাদ বলেন, বাল্যবিয়ে ও অপহরণের ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। কেউ অপরাধ করলে সে তার শাস্তি ভোগ করবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!