নড়াইল সদর উপজেলার কামালপ্রতাপ গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য রাজ্জাক মল্লিক (৭৫) হত্যাকান্ডে রহস্য উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের ছেলেসহ ৩ জনকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে।
সোমবার (২৪ আগষ্ট) সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর জায়নামাজে বসে কোরআন শরীফ পড়া অবস্থায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের হাতে ওই বৃদ্ধ খুন হন। রাজ্জাক মল্লিক সদর উপজেলার কামালপ্রতাপ গ্রামের মৃত মাজেদ মল্লিকের ছেলে এবং বাঁশগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রাজ্জাক মল্লিক সোমবার নিজ বাড়ির ঘরে মাগরিবের নামাজ আদায় করে রাত সাড়ে ৭টার দিকে জায়নামাজে বসে কোরআন পড়ছিলেন। তার স্ত্রী পাশের বাড়ির টিউবওয়েলে পানি আনতে গেলে ওই সময় দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায়।
নিহত রাজ্জাক মল্লিকের স্ত্রী হাসনাহেনা (৬৩) বলেন, আমার স্বামী নামাজ পড়ার পর প্রতিদিন কোরআন শরীফ পড়েন। কোরআন শরীফ পড়াকালে আমি প্রতিবেশি গিয়াসের বাড়ি থেকে পানি আনতে যাই। কিছু সময় পর আমার পুতা এশারক (৬) দৌড়ে এসে বলে দাদাকে কারা যেন কুপিয়ে মেরে ফেলছে। চিৎকার করতে করতে ঘরে গিয়ে দেখি স্বামীর রক্তাক্ত দেহ ঘরের মেঝেতে নামাজের পাটির উপর পড়ে আছে। আমার চিৎকারে প্রতিবেশিরা ছুটে আসে। আমি ঘটনাস্থলে আসার আগেই সন্ত্রাসীরা চলে যায়। হত্যাকারীদের আমি দেখি নাই। আমাগের শত্রুরাই আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। গ্রামে দলাদলির কারণে আমার দুই ছেলেই বাড়ি ছাড়া। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাবেক ইউপি সদস্য রাজ্জাক মল্লিক হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজ্জাক মল্লিকের বড় ছেলে রবিউল মল্লিক, কামাল প্রতাপ গ্রামের রসিদ মল্লিকের ছেলে নাজমুল হোসেন এবং পার্শবর্তী লোহাগড়া উপজেলার আমাদা গ্রামের অহিদার রহমান খানের ছেলে নাইচ খানকে আটক করা করা হয়েছে। আটক ওই তিনজন এখনো পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: ইলিয়াছ হোসেন জানান, রাজ্জাক মল্লিক হত্যা একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজ্জাক মল্লিকের বড় ছেলে রবিউল মল্লিক, কামলা প্রতাপ রসিদ মল্লিকের গ্রামের ছেলে নাজমুল হোসেন এবং আমাদা গ্রামের অহিদার রহমান খানের ছেলে নাইচ খানকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে বৃদ্ধ রাজ্জাক মল্লিকের হত্যাকান্ড নিয়ে এলাকায় ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মন্তব্য করছেন এ হত্যাকান্ডটি ঘটিয়ে উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা চলছে। পুলিশ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচন হবে।
খুলনা গেজেট / সুলতান/ এমএম