খুলনা, বাংলাদেশ | ২৬ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১১ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২
  হিযবুত তাহরীরকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করল ভারত

ভোট দিতে পেরে খুশি তাঁরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন খান দেলোয়ার হোসেন। প্রায় শতবর্ষী এই বয়োবৃদ্ধ লাঠিতে ভর করে দুই আত্মীয়কে নিয়ে এসেছেন বাইনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। তিনি সঠিকভাবে কথাও বলতে পারছিলেন না। তবুও বললেন নিজের ভোট দিতে এসেছি।

একই কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন ৮৯ বছর বয়সী মোঃ আলী আকবর শেখ। তিনি বলেন, নিজেই ভোট দিয়েছি। খুবই ভালো লাগছে।

খারাবাদ বাইনতলা স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন ৭৬ বছর বয়সী রাধারানী বিশ্বাস।

ছোট ছেলের বউ তানিয়াকে সাথে নিয়ে ভোট দিতে এসেছেন ৯০ বছর বয়সী আঃ খালেক আকুঞ্জি। তিনি বলেন, নিজের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরে ভালো লাগছে।

খুলনার বটিয়াঘাটার আমিরপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রগুলোতে বয়স্ক নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন। অনেকে লাঠি ভর করে আসছেন, পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে ফিরছেন খুশি মনে।

বাইনতলা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বলেন, ভোট দিয়েছি। কোন বাঁধা ছাড়াই ভোট দিতে পেরে ভালো লাগছে।

খারাবাদ বাইনতলা স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার বিকাশ কুমার শীল বলেন, কেন্দ্রের চারটি বুথে ভোটার রয়েছে হাজার ১৭৬ জন। প্রথম ঘন্টায় শতাধিক মানুষ ভোট দিয়েছেন।

বাইনতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার হেমো কান্তি হালদার বলেন, এখানের সাতটি ভোটকক্ষে ভোটার রয়েছে ২ হাজার ৫৪৮ জন। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ভোটাররা আসছে। ভোটার উপস্থিতি অনেক বেশি। প্রথম দুই ঘন্টায় ৩১৭ জন ভোট দিয়েছেন। প্রায় ১৫ শতাংশ ভোট কাস্ট হয় ওই সময়ে।

সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ভোট কেন্দ্রে আসতে শুরু করে ভোটাররা। বেলা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়তে শুরু করে ভোটারদের উপস্থিতি। কেন্দ্রগুলোতে বয়স্কদের দীর্ঘলাইন দেখা যায়।

এদিন সকাল ৮টায় শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে মাঠে রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র‌্যাব, কোষ্টগার্ড ও আনসার সদস্যরা।

আমিরপুর ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী জিএম মিলন বলেন, ভোটারদের সরব উপস্থিতি রয়েছে। কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখেছি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হচ্ছে।

একই ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফুজ্জাত হোসেন বলেন, সকাল থেকেই ভোটাররা আসছে। ভোটাররা কেন্দ্রে আসতে পারছে এতে শান্তি লাগছে। অন্তত তারা নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারছেন।

খুলনা জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, উৎসবমূখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। দু-এক জায়গা থেকে প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেওয়াসহ কিছু অভিযোগ পেয়ে সাথে সাথে সেখানে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যায়। তবে কোথাও ঘটনার সত্যতা পায়নি। দুপুর সোয়া ১২ টা পর্যন্ত জেলার কোথাও অপ্রীতিকর কোন ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি।

খুলনা জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইউপি নির্বাচনের প্রথম ধাপে খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা, কয়রা, দাকোপ, দিঘলিয়া ও পাইকগাছা পাঁচটি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নে নির্বাচন হচ্ছে।

ইউনিয়নগুলো হচ্ছে খুলনার বটিয়াঘাটার গংগারামপুর, বালিয়াডাঙ্গা, আমিরপুর; কয়রার আমাদি, বাগালী, মহেশ্বরীপুর, মহারাজপুর, কয়রা, উত্তর বেদকাশী, দক্ষিণ বেদকাশী; দাকোপেরে পানখালী, দাকোপ, লাউডোব, কৈলাশগঞ্জ, সুতারখালী, কামারখোলা, তিলডাঙ্গা, বাজুয়া, বানিশান্তা।

এছাড়া দিঘলিয়া উপজেলার গাজীরহাট, বারাকপুর, দিঘলিয়া, সেনহাটি, আড়ংঘাটা ও যোগীপুল; পাইকগাছা উপজেলার সোলাদানা, রাড়ুলী, গড়ইখালী, গদাইপুর, চাঁদখালী, দেলুটি, লতা, লস্কর ও কপিলমুনি ইউনিয়ন।

এবারের নির্বাচনে খুলনার ৩৪টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন ১৫৬ জন। এছাড়া সংরক্ষিত সদস্য পদে প্রার্থী ৪৬৪ জন এবং ৩০৬ সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী রয়েছেন ৯ হাজার ৪৮৩ জন।

এরমধ্যে দাকোপের লাউডোব ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ যুবরাজ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া কয়রা উপজেলার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মেম্বার পদে শেখ সোহরাব আলী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।

খুলনার ৩৪টি ইউনিয়নে ৩২৭ কেন্দ্রের ১ হাজার ৯০০ ভোটকক্ষে ভোটারের সংখ্যা ৬ লাখ ৪০ হাজার ৭৭৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৩ লাখ ২৩ হাজার ৩৮৩ জন ও পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৯৬ জন।

এবারের ইউপি নির্বাচনে প্রথমবারের মতো দুটি ইউনিয়নে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ চলছে। এর মধ্যে বটিয়াঘাটা উপজেলার গংগারামপুর ইউনিয়নের ১০টি ভোটকেন্দ্রের ৪৯ ভোটকক্ষে ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার ১৪৭ জন এবং দিঘলিয়ার বারাকপুর ইউনিয়নের ৯ কেন্দ্রের ৫৭ ভোটকক্ষে ১৯ হাজার ৪৮৫ জন ভোটার রয়েছেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!