বনবিভাগের পশ্চিম সুন্দরবনের আওতাধীন সাতক্ষীরা রেঞ্জে বিএলসি নবায়নে বনজীবীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। মাছ, কাঁকড়া, মধু ও গোলপাতা আহরণে সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য এবং পর্যটকবাহী ট্রলারের বিএলসি নবায়নে সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে ৬৫০ থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ বনজীবীদের। এছাড়া নির্ধারিত সময় পার হলেও বিএলসি নবায়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি বনবিভাগ।
বনবিভাগ সূত্র জানায়, পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের ৪টি স্টেশনের আওতায় ২ হাজার ৮০০ বিএলসি আছে। এর মধ্যে কৈখালী স্টেশনে ৫শ, কদমতলা স্টেশনে ৭শ, বুড়িগোয়ালীনি স্টেশনে ৮শ ও কোবাদক স্টেশনের আওতায় আছে ৯শটি বিএলসি।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ১শ মণ পরিমাপের নৌকার বিএলসির সরকারি রাজস্ব ২৪ টাকা। ৫০ মণের জন্য ১২ টাকা। আর ২৫মণ পরিমাণের নৌকার রাজস্ব ৬ টাকা। তবে, বনজীবীদের কাছ থেকে বিএলসি নবয়ান করতে ৬৫০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা করে নিচ্ছে দালালরা।
বনজীবীদের অভিযোগ, অসাধু বন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নানা প্রকার চাপ প্রয়োগ এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দালালদের মাধ্যমে ২৫ মণের নৌকার বিএলসি নবায়নে ৬৫০শ থেকে ৭৫০শ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। এছাড়া সুন্দরবণ ভ্রমণের ট্রলারের বিএলসি নবায়নে ১২০০-১৮০০ টাকার পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে ৩৫০০ টাকা করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বনজীবী জানান, তারা স্থানীয় দালালের মাধ্যমে ৭৫০ টাকা করে দিয়ে বিএলসি নবায়ন করেছেন। বনের পাশ বন্ধ, কোন আয় নেই। তারপরেও তাদের অতিরিক্ত টাকা দিয়ে বিএলসি নবায়ন করতে হয়েছে।
তারা আরও জানান, দালালদের মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে বিএলসি নবায়ন না করলে হুমকির মধ্যে থাকতে হয়। এ কথা কারো কাছে জানালে তাকে সুন্দরবনে বৈধ বা অবৈধ কোনভাবেই প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। তাছাড়া কেউ লাফালাফি করলে তার বিরুদ্ধে একাধিক বন মামলা দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। অতিরিক্ত টাকা দিতে অস্বীকার করলে বিএলসি নবায়নে হয়রানির শিকার হতে হয়। নৌকা স্টেশনে এনে মাপ জরিপ করে মিলিয়ে বিএলসি প্রদান করা হয়। কিন্তু দালালের মাধ্যমে করলে, টাকা যায় বেশি। কোন ঝামেলা করে না।
এ প্রসঙ্গে বুড়িগোয়ালীনি স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান আহম্মেদ বলেন, সরকারি নিতিমালা অনুযায়ী বিএলসি নবায়ন শুরু হয়েছে। দীর্ঘ দিন সুন্দরবনের পাশ বন্ধ থাকায় জেলেরা বিএলসি নবায়নে উৎসাহ পাচ্ছে না। চলতি মৌসুমে অল্প কিছু সংখ্যক বিএলসি নবায়ন হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে বিএলসি নবায়নের সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া বিএলসি নবায়নে অতিরিক্ত কোন অর্থ নেওয়া হচ্ছে না।
খুলনা গেজেট/এনএম