বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির–সিপিবি’র সাবেক সভাপতি কমরেড রতন সেনের মৃত্যুবার্ষিকী শনিবার। ১৯৯২ সালের ৩১ জুলাই পুলিশ সুপার কার্যালয়ের বিপরীতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে তিনি খুন হন। পঞ্চাশ বছর তিনি দক্ষিণাঞ্চলে কমিউনিষ্ট আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। সাপ্তাহিক একতা ও স্বাধীনতা পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখতেন তিনি।
বরিশালের গৌরনদীর তার পৈত্রিক নিবাস। নরেন্দ্র নাথ সেনগুপ্ত তার পিতা। ১৯৩৮ সালে দৌলতপুর মুহাসিন হাইস্কুল ম্যাট্রিক পাস করেন। দৌলতপুর হিন্দু একাডেমী থেকে এইচ এসসি, ১৯৪২ সালে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯২৮ সালে নিখিল বঙ্গ ছাত্র সমিতিতে যোগদানের মাধ্যমে তার রাজনীতি শুরু। পরবর্তীতে ছাত্র ফেডারেশনের সাথে যুক্ত ছিলেন। ১৯৪২ সালের আগষ্ট মাসে অবিভাক্ত ভারতের কমিউনিষ্ট পাটির সদস্য লাভ করেন। ১৯৪৫ সালে বটিয়াঘাটার বিশ্বম্ভর বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন।
১৯৪৭ সালের কমিউনিষ্ট পার্টির খুলনা জেলা শাখার অফিস সেক্রেটারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৮-৫৪ পাকিস্তান আমলে এবং ১৯৫৮ সালে সেনা শাসক মোঃ আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করলে রাজনৈতিক কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়, ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত কারাবরণ করেন। ১৯৭৩ সালে সিপিবি’র কেন্দ্রিয় সদস্য ও ১৯৮৯ সালে দলের কেন্দ্রিয় সম্পদকমন্ডলীর সদস্য ছিলেন। ১৯৮৪ থেকে ৯২ পর্যন্ত খুলনা জেলা শাখার সভাপতি ছিলেন। তার নামানুসারে জেনারেল হাসপাতালের সামনের সড়ক রতন সেন স্মরণী, রতন সেন পাবলিক লাইব্রেরী এবং রূপসা উপজেলার পালের হাটে রতন সেন কলেজিয়েট গার্লস স্কুল স্থাপিত হয়েছে।
তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) খুলনা জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে সকাল ৯টায় কমরেড রতন সেন হত্যাস্থল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কে ডি ঘোষ রোডে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ কমরেড রতন সেন স্কয়ারে সিপিবি, ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, টিইউসি, কৃষক সমিতি, ক্ষেতমজুর সমিতি, রতন সেন পাবলিক লাইব্রেরী, উদীচী, খেলাঘর আসরসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হবে। সন্ধ্যা ৬টায় দলীয় কার্যালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত আলোচনাসভা ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি পালন করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে সিপিবি’র উদ্যোগে খুলনার বিভিন্ন থানা ও উপজেলায় পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।