অতি বৃষ্টিপাতের ফলে খুলনার কয়রায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তলিয়ে আছে বসতভিটা, মৎস্য ঘের ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট।অভিযোগ রয়েছে পানি নিষ্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকার।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধীরাজ রায় বলেন, বিঘা প্রতি ৮ হাজার টাকা করে হারিতে ৪ বিঘা জমিতে কই মাছের চাষ করেছিলাম। কিন্তু আষাঢ়ের প্রথম দিকে ভারি বৃষ্টিতে সব তলিয়ে যায়। রাস্তায় নেট দিয়ে কিছু মাছ আটকে রাখলেও গত ৩ দিনের অতিবৃষ্টিতে অবশিষ্ট কিছু রইলনা।
পশ্চিম দেয়াড়া একতা সংঘের সহ-সভাপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বন্যায় আমাদের ঘের, ঘর-বাড়ি আবারও পানিতে প্লাবিত। মহারাজপুর ও হোগলা ইউনিয়নের ৮/৯ হাজার বিঘা জমির পানি সরবরাহ হয় হোগলার গেট দিয়ে। সেটি শতাধিক বছর আগে স্থাপিত ও বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেখানে একটি স্লুইস গেট স্থাপনের দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, শাকবাড়িয়ার খালে নেট-পাটা দিয়ে মাছ ধরা হয়। এছাড়া কিছু স্থানে বাঁধও দেয়া হয়েছে। ফলে পানি নিষ্কাশনে চরম সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
মৎস্য চাষি ইউনুছ আলী বলেন, গত ২৬ মে ঝড়ে দশহালিয়ায় কপোতাক্ষ নদীর বাঁধ ভেঙ্গে মূহুর্তের মধ্য আমার ঘের ভেসে যায়। আমরা সকলে স্বেচ্ছাশ্রমে রিংবাঁধ দিই। পানি নেমে গেলে আবার মৎস্য ঘের জেগে ওঠে। পুনরায় আবারো মাছ চাষে নেমে পড়ি। কিন্তু তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে আবারও ভেসে গেছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আলাউদ্দিন বলেন, উপজেলায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে মৎস্য চাষ করা হয়। তিন দিনের অতিবৃষ্টিতে ৫ হাজার হেক্টরের বেশি মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়েছে। প্রাথমিক ধারণা প্রায় ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৯ হেক্টর জমিতে বীজতলা করা হয়েছিল। সেখান থেকে ১৫ হেক্টর জমিতে পাতা রোপন করাও হয়েছিল। কিন্তু গত তিন দিনের অতিবৃষ্টিতে সব বীজতলা তলিয়ে আছে। অতিদ্রুত বিলের পানি নিস্কাশন করতে না পারলে আগামি বছরের লক্ষ্যমাত্রা পূরন করা অসম্ভব হয়ে যাবে ।
খুলনা গেজেট/ টি আই