খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  বাইক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন স্বামী, বেঁচে গেলেন স্ত্রী
  সরকারি সুবিধা নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে : ইসি রাশেদা
  ময়মনসিংহে বাসের চাপায় অটোরিকশার ২ যাত্রী নিহত
খানজাহান আলী থানায় শতাধিক ইজিবাইক ও অটোরিক্সা আটক

‘সরকার আর্থিক সহযোগিতা করুক, গাড়ী বন্ধ রেখে ঘরে অবস্থান করবো’

ফুলবাড়িগেট প্রতিনিধি

‘সরকার আমাদেরকে আর্থিক কিছু সহযোগিতা করুক লকডাউনে আমরা গাড়ী বন্ধ রেখে ঘরে অবস্থান করবো। কথা দিচ্ছি আমরা গাড়ী নিয়ে আমরা আর রাস্তায় বের হবো না।’ এমনটাই বলছিলেন ইজিবাইক চালক আজগর।

সর্বাত্মক বা কঠোর লকডাউনে সরকারি বিধি নিষেধ অমান্য করায় খানজাহান আলী থানা পুলিশ শতাধিক অটোরিক্সা ও ইজিবাইক আটক করে থানায় জব্দ করেছে। পুলিশ বলছে এ সকল যানবাহনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না হওয়ায় লকডাউন শেষে স্ব-স্ব চালকের নিকট গাড়ী গুলোকে পুনরায় হস্তান্তর করা হবে।

জরুরী প্রয়োজনে গাড়ী নিয়ে বের হওয়া আটককৃত এ সকল অটোরিক্সার ব্যাটারি নষ্ট হওয়ার আশংকায়, সেগুলো ফেরৎ পেতে থানার সামনে অবস্থান নেয় আটককৃত গাড়ীর চালকরা। আয়ের একমাত্র বাহন এভাবে নষ্টের হাত থেকের রক্ষা করতে একটি বার সুযোগ চান তারা।

দেশে গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউন বা সর্বাত্মক লকডাউনে খানজাহান আলী থানা পুলিশের হাতে আটক মাহেন্দ্র, ইজিবাইক, মটরভ্যান সহ অর্ধশতাধিক ছোট যান আটক করে থানার মধ্যে খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়েছে। কঠোর লকডাউনের মাত্র দু দিনে থানার অভ্যন্তরে আটক ইজিবাইকে ভরে গেছে।

শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) পৌনে ১২টায় এ সকল গাড়ীর চালকরা মুচলেকা দিয়ে গাড়ী গুলোকে ফেরৎ নিতে থানার সামনে অবস্থান নেয়। তারা প্রশাসনের উর্ধতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষন করে পরিবার গুলোর বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করে।

এদের মধ্যে ইজিবাইক চালক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমার বাড়ীর সামনে থেকে আমার গাড়ীটি পুলিশ আটক করে নিয়ে এসেছে। আমি অনেক অনুরোধ করে তাদেরকে বলেছি আমি যাত্রী বহনের জন্য গাড়ী বের করিনি, আমি ঔষধ আনতে শিরোমণি যাওয়ার জন্য বের হয়েছি। কিন্তু আমার কোন কথা না শুনে তারা আমার ইজিবাইকটি থানায় নিয়ে আটকে রেখেছে। এভাবে দু’তিন দিন থাকলে আমার গাড়ীর ব্যাটারি ডাউন হয়ে গাড়ীটি চালানোর অনুপযোগী হয়ে যাবে। প্রতিটি ব্যাটারির মূল্য প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা, আর এ ব্যাটারি গুলো নষ্ট হয়ে গেলে পুনরায় ব্যাটারী কেনার সামর্থ্য আমার নাই।’

মহেন্দ্র চালক আজগর জানান, মা, বাবা, স্ত্রী, সন্তান সাত জনের সংসারে উপার্জনের একমাত্র ব্যক্তি তিনি। একদিন গাড়ী না চালালে সংসার চলে না তার পরও লকডাউনে গাড়ী বন্ধ রেখেছিলেন। জরুরী প্রয়োজনে রাস্তায় নামতেই তার গাড়ীটি পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়।

মটরভ্যান চালক ইব্রাহিম বলেন, গরীবের কথা কেউ শোনেনা। বাসায় গেলে পরিবারের মানুষ গুলো তাকিয়ে থাকে বাজার থেকে কি নিয়ে আসলাম। সারাদিন গাড়ী চালিয়ে যা পাই তাই দিয়ে চাল-ডাল কিনে নিয়ে যাই। কিন্তু লকডাউনে  আয় বন্ধ করে মরার পথ হয়েছে। এর উপর এভাবে ভ্যানটি আটকে রাখলে আয়ের মাধ্যম ভ্যানটি নষ্ট হয়ে যাবে।

থানার সামনে অবস্থান নেওয়া সকলে প্রথম বারের মতো মুচলেকা নিয়ে আটক ছোট যানগুলোকে ছেড়ে দেওয়ার দাবী জানান।

এ ব্যাপারে খানজাহান আলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ প্রবীর কুমার বিশ্বাস অটোরিক্সা আটকের কথা স্বীকার করে বলেন, সর্বাত্মক লকডাউনে সরকারি আদেশ অমান্য করে যানবাহন গুলো যাত্রী বহন করায় তাদেরকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। লকডাউন শেষ হলে যানবাহন গুলোকে স্ব-স্ব ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ সকল ছোট যানবাহনের বিরুদ্ধে কোন মামলা করা হয়নি। আটককৃত অটোরিক্সার ব্যাটারী যাতে নষ্ট না হয়ে যায়, সে জন্য যারা ব্যাটারি খুলে নিতে আসছে তাদেরকে আমরা ব্যাটারি দিয়ে দিচ্ছি।

 

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!