খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৮ মে, ২০২৪

Breaking News

  প্রথম ধাপের উপজেলা ভোট শেষ, চলছে গণনা
  উপজেলা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে জনগণ : রিজভী
  তেঁতুলিয়ার খয়খাটপাড়া সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত

শ্যামনগরে জোড়া খুনের ঘটনায় নিরাপরাধ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার শ্যামনগরের টেংরাখালীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে দু’জন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নিরাপরাধ ও নিরিহ মানুষকে জড়িয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছ। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে মামলার দায় থেকে স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের অব্যাহতির দাবি জানিয়েছন উপজেলার কালিঞ্চি গ্রামের আলী আজগর বুলুর স্ত্রী মোছাঃ রনজু আক্তার লিজা।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৮ জুলাই বিকালে শ্যামনগরের টেংরাখালীর আরশাদ আমিনের মোড়ে ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল বারি ও বর্তমান ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ লাল্টু গ্রুপের সাথে ফ্যান মেরামত নিয়ে তর্কবিতর্কের জেরে সংঘর্ষ ঘটে। এতে দুই গ্রুপের অনেকেই আহত হলেও বারী গ্রুপের আব্দুল কাদের ও আমির হোসেন নামের দু’জন মারা যান। যা একটি ন্যাক্কার জনক ঘটনা। ঘটনাটি আমাদের ব্যথিত করেছে। এঘটনায় আব্দুল বারী বাদী হয়ে গত ১৩ জুলাই শ্যামনগর থানায় ৭৩ জনের উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩০/৪০ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-১৩। মামলায় ২নং আসামী করা হয়েছে আমার স্বামীকে। এছাড়া আমার ভাসুর আজবাহার, মুজিবুর, আজিবর, মুকুল, আজবাহারের ছেলে জাকির, মৃত. কাশেম গাইনের ছেলে গফফার গাইন, মুকুল গাজীর ছেলে মুন্না , হাকিম গাজীর ছেলে হাফিজুর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ঘটনার সাথে আমার স্বামী ৯নং ওয়ার্ড সদস্য আলী আজগর বুলুসহ তার ভাই, ভাইপোদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। ঘটনার সময় আমার স্বামী এবং ভায়েরা সেখানে ছিলেন না। অথচ মামলার এজাহারে আমার স্বামীকে আসামী করা হয়েছে। অথচ ঘটনার সময় আমার স্বামী মসজিদের আসরের নামাজ আদায় করে কালিঞ্চি প্রাইমারী স্কুল সংলগ্ন রফির মার্কেটে ইউপি সদস্যের নিজ অফিসে অবস্থান করছিলেন এবং মাগরিবের নামাজও সেখানে আদায় করেন। সেখানে কালিঞ্চি গ্রামের শতাধিক মানুষ ছিলো। ওই অফিস থেকে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে প্রায় ৬ কিলোমিটার দুরে। অথচ উক্ত ঘটনাকে পুঁজি করে ইউনিয়নের বহু অসহায় নিরাপরাধ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামীসহ তার চার ভাই ও ভাইপোদের ওই মামলায় জড়িয়ে দিয়ে আমার পুরোপরিবার আজ পুরুষ শূণ্য। অথচ আমার ভাসুর পুত্র জাকির জীবিকার তাগিদে ঘটনার ১৫দিন পূর্বে ঢাকায় রিকসা চালাতে গেছে। ঢাকা শহরের সিসি ক্যামেরা চেক করলে প্রমান পাওয়া যাবে। তাকেও আসামী করা হয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে গত ইউপি নির্বাচনে ৯নং ওয়ার্ডের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হন আমার স্বামী আলী আজগর বুলু। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আব্দুর গফফর পরাজিত হন। অন্যদিকে ৮নং ওয়ার্ডের পরাজিত হন আব্দুল বারী। আব্দুর বারী ও গফফার অত্র ইউনিয়নের সরকারি জমি এবং অসহায় মানুষের জমি যৌথভাবে দখল করে আসছেন। ফলে তাদের মধ্যে সু-সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া জমি জমা নিয়ে আব্দুল গফফারের সাথে আমার স্বামীর বিরোধ রয়েছে। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার ক্ষোভ এবং জমি-জমা বিরোধ নিয়ে আমার স্বামীকে হয়রানি করতে উক্ত গফফার আমার স্বামীসহ ভাসুর এবং ভাইপোকে ওই মামলায় আসামি করেছে।

তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে পরিকল্পিতভাবে নিরাপরাধ মানুষদের আসামি বানিয়ে হয়রানি করতে গফফার ও বারী একত্রে বসে আসামিদের তালিকা প্রস্তুত করেছে। বর্তমানে পুরুষ শূন্য থাকায় তাদের লোকজন বাড়ির নারী ও শিশুদের উপর নির্মম নির্যাতনসহ তারা আমাদের বাড়িঘর ভাংচুর, মৎস্যঘের দখল ও লুটপাট চালিয়েছে। বর্তমানে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় জীবন যাপন করছি।

সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি উক্ত মামলা থেকে তার স্বামীসহ তার ভাই, ভাইপো ও নিরাপরাধ কর্মীসমর্থকদের অব্যাহিত প্রদান এবং সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত আসামিদের মামলায় অন্তর্ভূক্ত করার দাবিতে জেলা প্রশাসক ও সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!