খুলনা, বাংলাদেশ | ২৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৯ মে, ২০২৪

Breaking News

পূরণ হতে পারে দলের শূন্য পদ

শিগগিরই মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা

গেজেট ডেস্ক

স্থবিরতা কাটাতে খুব শিগগিরই সরকারি দল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শূন্য পদ পূরণ ও মন্ত্রীসভায় রদবদলের সম্ভাবনা আছে বলে নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে।

দলীয় সূত্রগুলো বলছে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ওই বৈঠক থেকেই সাংগঠনিক কর্মকান্ড জোরদারের নির্দেশ আসতে পারে। এরপর মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা আছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর দু’জন সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ও সাহারা খাতুন এবং নির্বাহী সদস্য বদরউদ্দিন আহমেদ কামরান মারা গেছেন। এ ছাড়া গত অক্টোবরে হওয়া আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে যে কমিটি হয়েছে, এতে আগে থেকেই চারটি পদ ফাঁকা ছিল। এখন তিনজন সদস্য মারা যাওয়ায় সব মিলিয়ে সাতটি পদ ফাঁকা হয়েছে। অনেকগুলো জেলা কমিটি ও কয়েকটি সহযোগী সংগঠনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকনির্ভর কমিটি হয়েছে। কিন্তু এখনো সেগুলো পূর্ণাঙ্গ হয়নি।

দলের নীতিনির্ধারণী সূত্র বলছে, করোনার কারণে হয়তো শিগগিরই সভা-সমাবেশ করার সুযোগ হবে না। কিন্তু রাজনীতির মাঠে তৎপরতা বাড়াতে তাই সাংগঠনিক কর্মকান্ডে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আওয়ামী লীগের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মারা যাওয়ায় এই মন্ত্রণালয়ে নতুন কাউকে নিয়োগ দিতে হবে। করোনাকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নিয়ে দলে, দলের বাইরে সর্বত্রই ক্ষোভ দেখা দিয়েছে, সমালোচনা হয়েছে। এমনকি জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের সদস্যরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে সরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছে। এই নেতা বলেন, মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা আছে।

দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গত রোববার গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক হয়। সেখানে পাঁচটি আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের পাশাপাশি সমসাময়িক অন্য বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। ওই বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলী ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ফারুক খানও ছিলেন। তিনি জাতীয় একটি দৈনিককে বলেছেন, উপনির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ের পাশাপাশি ওই বৈঠকে করোনা, বন্যা পরিস্থিতি ও সাংগঠনিক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা সাংগঠনিক বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করার লক্ষ্যে আরও বৈঠক করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ফলে সামনের দিনগুলোয় সাংগঠনিক তৎপরতা বাড়বে। তবে পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিও নজরে রাখা হবে।

গত বছর ২০-২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর কয়েক দফায় বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হয়। তবে ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ধর্মবিষয়ক সম্পাদক, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক এবং দুটি নির্বাহী সদস্যের পদ এখনো ফাঁকা রয়েছে।

আওয়ামী লীগে রদবদল হলেও সভাপতিমন্ডলী থেকে গত সম্মেলনে একজনও বাদ যাননি। বরং আগে থেকে ফাঁকা থাকা পদে শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান নতুন যুক্ত হন। সম্প্রতি মোহাম্মদ নাসিম ও সাহারা খাতুন মারা যাওয়ায় দুটি পদ আবার শূন্য হলো।

দলীয় সূত্র বলছে, সভাপতিমন্ডলীর দুটি পদ সম্পাদকমন্ডলী ও নির্বাহী সদস্যদের থেকে পূরণ করার সম্ভাবনা বেশি। বিশেষ করে চারজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে কারও কারও সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে। এর বাইরে মন্ত্রিসভার দু-একজন সদস্যের নাম নিয়েও আলোচনা আছে। জাতীয় চার নেতার পরিবারের কোনো কোনো সদস্যের অন্ডর্ভুক্তির সম্ভাবনা আছে বলে আলোচনা রয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরেই আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন প্রয়াত ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। সর্বশেষ সম্মেলনে এ পদটিতে কাউকে রাখা হয়নি। ধর্মীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারেন-এমন কাউকে খুঁজছে দল। অন্যদিকে শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক পদে কোনো ব্যবসায়ীর স্থান পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলী সমস্য কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত রোববার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংগঠনিক কর্মকান্ড বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেছেন। সেপ্টেম্বরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক হতে পারে। সেখানে হয়তো সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক নানা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকান্ড নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বেশি আলোচিত। এ ছাড়া বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো কোনো মন্ত্রণালয়েও পরিবর্তনের আভাস আছে। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী নিয়োগের সময় অন্য দু-একটা মন্ত্রণালয়ে সংযোজন, বিয়োজন বা পরিবর্তন হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারুক খান বলেন, মন্ত্রিসভার রদবদল নিয়ে দলীয় প্রধান কিছু বলেননি। তবে এটা প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। তিনি প্রয়োজন অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত নেবেন। সূত্র : প্রথম আলো।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!