খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৭ মে, ২০২৪

Breaking News

  গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সম্মত হামাস
  সারাদেশে বজ্রপাতে প্রাণ গেল ১১ জনের

রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষেই চলে পাঠদান

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা শহরের রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। বিদ্যালয়টির ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। পলেস্তারা নষ্ট হয়ে দেয়ালের ইট বের হয়ে গেছে। ভয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বসছে না। ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যালয়টির এমন করুণ দশার কারণে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত অধ্যাপক মরহুম ডা. এম আর খান তার নিজের জন্মস্থান সাতক্ষীরা পৌর শহরের ৯নং ওয়ার্ডের রসুলপুর এলাকায় রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত করেন। ওই এলাকাসহ স্থানীয় ৫৫০ জন শিক্ষার্থী বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে পড়াশোনা করছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংষ্কারের অভাবে বিদ্যালয়টির ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শ্রেণীকক্ষ সংকটে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। ভবনের প্রায় সব কক্ষই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ পুরনো ভবনে রীতিমতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান ও পাঠগ্রহণ। এই অবস্থায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রাখলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুরাইয়া, মুর্শিদা, লামিয়া, শাওন ও সাকিব এবং ৮ম শ্রেণির ‘খ’ শাখার শিক্ষার্থী রিমি খাতুন, রাকিবা ইসলাম, মেহেরিন ও রুবাবা খাতুন জানায়, শ্রেণিকক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে প্রায়ই নিচে পড়ে। ক্লাস শেষ করে স্যার চলে গেলেই আমরা ক্লাস থেকে বের হয়ে যাই। কেননা আমরা সব সময় ভয়ে থাকি, কখন ছাদের পলেস্তারা ভেঙে মাথায় পড়ে। অনেকে ভয়ে ক্লাসে ঢুকতে চায় না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতানা নারগিস জানান, আমাদের বিদ্যালয়টির ভবন বেশ পুরনো। এর অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষ পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভবনের ছাদের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।

তিনি আরও জানান, ভবনের এমন সমস্যার কারণে সাইকেল সেডের টিনের ঘরে গাদাগাদি করে কয়েকটি ক্লাস নিতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আমরা সবাই চরম আতঙ্কে আছি। এতে করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ক্লাস শেষ হলেই শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে বিদ্যালয়ে আসছে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণে এখনো কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তিনি দ্রুত বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবনের জন্য কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মকসুমুল হাকিম জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টি অযত্নে অবহেলায় রয়েছে। পুরনো এই জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝড়-বৃষ্টিতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো যায় না। পাঠদানসহ শিক্ষা কার্যক্রম ভালোভাবে অব্যাহত রাখতে দ্রুত বিদ্যালয়ে বহুতল ভবন নির্মাণের দাবি জানান তিনি। রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন পত্র পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অজিত কুমার সরকার জানান, শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য শিক্ষামন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন জরাজীর্ণ বিদ্যালয় ভবনগুলি চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করতে। আমরা খুব শিগগিরই তালিকা করবো এবং রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় সেই তালিকায় অবশ্যই থাকবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!