খুলনা, বাংলাদেশ | ১৯ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২ মে, ২০২৪

Breaking News

  ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের

প্রধানমন্ত্রী থেকে কারাবন্দী ইমরান খান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বলা চলে অনেকটাই ধূমকেতুর মতোই তার উত্থান। পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেট দলের নেতা থেকে জাতির নেতা হয়ে উঠেছিলেন দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক পরিক্রমায়। কিন্তু ভাগ্যের বিড়ম্বনায় মাত্র বছরের মধ্যেই আবারও সাধারণ মানুষের কাতারে পাকিস্তানের রাজনীতিতে অসাধারণ হয়ে এই নেতা।

মঙ্গলবার (৯ মে) ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে তাকে গ্রেফতার করে ইসলামাবাদ পুলিশ। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে তার জীবনের নতুন অধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী থেকে হয়ে গেছেন কারাবন্দী।

২০২২ সালের এপ্রিলে বিরোধীদলগুলোর প্রচেষ্টায় অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান। হারান প্রধানমন্ত্রীত্ব। এরপর বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে অন্তত ১৫৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ, আদালত অবমাননা এমনকি ধর্ম অবমাননার অভিযোগও আনা হয়েছে।

নিচে ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রীত্ব হারানোর পর কারাবন্দী হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন বড় ঘটনার একটি টাইমলাইন তুলে ধরা হলো:

৮ মার্চ, ২০২২: এই দিনে ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রীত্বের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে বিরোধী ১৩টি রাজনৈতিক দল মিলে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। সেই যাত্রা শুরু।

২৭ মার্চ, ২০২২: ইমরান খান অভিযোগ করেন, তাকে এবং তার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতেই ‘বিদেশি তহবিল তছরুপের’ ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ আনা হয়েছে।

৩ এপ্রিল, ২০২২: পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার কাসিম সুরী অনাস্থা প্রস্তাবকে বিদেশি ষড়যন্ত্র বলে তা নাকচ করে দেন। সেদিনই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি ইমরান খানে পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন।

৭ এপ্রিল, ২০২২: কিন্তু পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট জাতীয় পরিষদের স্পিকারে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিলের সিদ্ধান্তকে বাতিল করে দেন। একইসঙ্গে জাতীয় পরিষদের নিম্নকক্ষ ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্তকেও বাতিল করে দেন। আদালত ৯ এপ্রিল অনাস্থা ভোট গ্রহণের নির্দেশ দেন।

৯ এপ্রিল, ২০২২: আদালতের সিদ্ধান্ত অনুসারে এদিন অনাস্থা ভোট উত্থাপিত হয় এবং ইমরান খান অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রী হারান। পাশাপাশি জাতীয় পরিষদে তার জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর কারণে তার সরকারেরও পতন হয়।

১১ এপ্রিল, ২০২২: ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতারা একযোগে জাতীয় পরিষদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। ইমরান খান দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দেন এবং অবিলম্বে নির্বাচনের দাবি জানান।

২৫ মে, ২০২২: পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি সাপেক্ষে ইমরান খান লং মার্চ নিয়ে ইসলামাবাদে প্রবেশ করেন। পরদিন ২৬ মে ইমরান খান তার আন্দোলন গুটিয়ে নেন এবং সরকারকে মধ্যবর্তী নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জন্য ৬ দিন সময় বরাদ্দ করেন।

২০ আগস্ট, ২০২২: ইসলামাবাদের এক জনসভায় একজন নারী বিচারককে হুমকি দেয়ার অভিযোগে ইমরান খানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

২ অক্টোবর, ২০২২: তোষাখানা (সরকারি সংরক্ষণাগার) মামলায় পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ইমরান খানকে নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে অযোগ্য বলে ঘোষণা করে।

২৮ অক্টোবর, ২০২২: আগাম নির্বাচনের দাবিতে আবারও লাহোর থেকে ইসলামাবাদ অবধি লং মার্চের যাত্রা শুরু করেন ইমরান খান।

৩ নভেম্বর, ২০২২: লং মার্চ নিয়ে পাঞ্জাব প্রদেশের ওয়াজিরাবাদ জেলায় পৌঁছালে সেখানে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দেয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন ইমরান খান।

৪ নভেম্বর, ২০২২: ইমরান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং জ্যেষ্ঠ সেনাকর্মকর্তারা তাকে হত্যা চেষ্টার পেছনে দায়ী বলে অভিযোগ করেন।

১৪-১৮ জানুয়ারি, ২০২৩: সরকারকে আগাম নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে চাপ প্রয়োগ করতে পিটিআইয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা পাঞ্জাব এবং খাইবার পাখতুনখাওয়ার প্রাদেশিক পরিষদ ভেঙে দেয় পিটিআই।

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩: তোষাখানা মামলায় ইসলামাবাদের একটি আদালত ইমরান খানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

৫ মার্চ, ২০২৩: ইসলামাবাদ এবং লাহোর পুলিশের যৌথ দল লাহোর ইমরান খানের বাসভবনে অভিযান চালায় তাকে গ্রেফতারে। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে।

৩ মে, ২০২৩: ইমরান আবারও অভিযোগ করেন, জ্যেষ্ঠ সেনাকর্মকর্তারা তাকে দ্বিতীয়বার হত্যা পরিকল্পনা করেছে।

৮ মে, ২০২৩: পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ইমরান খানের অভিযোগকে নোংরা এবং ভুয়া আখ্যা দিয়ে তাকে আইনি উপায়ে সবকিছু মোকাবিলার পরামর্শ দেয়।

৯ মে, ২০২৩: এদিন ইমরান খান আবারও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তার অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেন। পরে সেদিনই পাকিস্তানের দুর্নীতি দমন সংস্থার দায়ের করা এক মামলাসহ দুটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে যান ইমরান খান। আদালত প্রাঙ্গণ থেকেই ইমরান খানকে গ্রেফতার করে আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স। নিয়ে যাওয়া হয় ইসলামাবাদ পুলিশ হেডকোয়ার্টারে।

খুলনা গেজেট/এমএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!