খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৮ মে, ২০২৪

Breaking News

  জিম্বাবুয়েকে ৯ রানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিশ্চিত করলো বাংলাদেশ
  হজ ভিসা ইস্যুর মেয়াদ ১১ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের : হাব
  টাঙ্গাইলের কা‌লিহাতী‌তে কাভার্ডভ্যান-ট্রা‌ক সংঘ‌র্ষে চালক নিহত

প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিনামূল্যে ঘর এবং জমি পেয়ে দারুণ উৎফুল্ল দিঘলিয়ার ৭০টি পরিবার

একরামুল হোসেন লিপু, দিঘলিয়া

মোঃ হাশেম আলী। বয়স ৯০ এর কাছাকাছি। পেশায় ছিলেন একজন মাঝি। নগরঘাট খেয়াঘাটে নৌকা চালাতেন। পরবর্তীতে নৌকা চালানো ছেড়ে দিয়ে দিন মজুরের কাজ শুরু করেন। নিজস্ব সম্বল বলতে কিছুই ছিল না। দেয়াড়া কলোনীতে পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার ঘর এবং জমি পেয়ে তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে বলেন, ‘জীবনে কখনো কল্পনাও করতে পারিনি জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে এমন সুন্দর ঘর এবং জমির মালিক হতে পারবো। সারা জীবন স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে দেয়াড়া কলোনী এলাকায় ভাড়া বাসায় দিন যাপন করেছি। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে ঘর এবং জমির মালিক হতে পেরে আমি ভীষণ খুশী।’ এ জন্য তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এবং দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহাবুবুল আলমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনূরুপ অনুভূতি ব্যক্ত করেন ভৈরব নগরে সরকারি ঘর এবং জমি পাওয়া ৮৫ বছর বয়সী ফাতেমা বেগম এবং সালাম শেখ। ফাতেমা বেগম এ প্রতিবেদকের কাছে তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘যুদ্ধের সময় স্বামী মারা যায়। সেই থেকে কষ্টের জীবন শুরু। খুলনা রেল লাইনের পাশে বস্তিতে সন্তানদের নিয়ে থেকেছি দীর্ঘদিন। পরবর্তীতে দিঘলিয়া উপজেলার দেয়াড়া আইয়ুব শেখের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থেকেছি। কখনো ভাবতেও পারিনি ঘর এবং জমির মালিক হতে পারবো। বিনামূল্যে ঘর এবং জমির মালিক হতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করছি।’ তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি প্রাণভরে দোয়া করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দিঘলিয়ার ইউএনওকে।’

একই রকম অনুভূতি ভৈরব এবং আতাই নগরে বসবাসকারী ৭০টি পরিবারের। সরকারি ঘর এবং জমি উপহার পেয়ে সবাই এ প্রতিবেদকের কাছে তাদের উৎফুল্লতা প্রকাশ করেন।

‘‌’আশ্রায়নের অধিকার শেখ হাসিনার উপহার’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দেশের সকল গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য গৃহপ্রদান প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় উপজেলা প্রশাসনের বাস্তবায়নে ১ম পর্যায়ে দিঘলিয়া উপজেলায় ৭০ টি পরিবারকে বিনামূল্যে ঘর এবং জায়গা প্রদান করা হয়।

উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সরকারি খাস জমির উপর উপজেলার ২টি স্থানে নয়নাভিরাম আশ্রায়ন কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। দিঘলিয়া গ্রামের ঈদগাহ সংলগ্ন ভৈরব নদীর তীরবর্তী দশমিক ৭৭ দশমিক ০৪৫ একর জায়গার উপর ‘ভৈরব নগর’। এই নগরে বসবাস করেন ২১ টি পরিবার। আর হাজীগ্রামে আতাই নদীর তীরবর্তী প্রায় দেড় একর জায়গার উপর ‘আতাই নগর’ এখানে বসবাস করেন ৪৯ টি পরিবার।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুঠোফোন এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আতাই নগর’ আশ্রায়ন প্রকল্পের সাথেই ৪ একর জায়গার উপর নির্মাণ করা হবে স্টেডিয়াম। ইতিমধ্যে স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। আর ‘ভৈরব নগর’ আশ্রায়ন প্রকল্পের পাশেই নির্মাণ করা হবে সুদর্শন পার্ক।

দিঘলিয়া উপজেলা প্রশাসন ১ম পর্যায়ের কাজ শুরু করেছিলো ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর এবং কাজ সম্পন্ন করেন ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি। প্রত্যেকটি পরিবারের জন্য ২টি থাকার ঘর, ১টি রান্না ঘর এবং ১টি টয়লেট নির্মাণ করা। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছিলো ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। গত ২৩ জানুয়ারি সুবিধাভোগী ৭৯ টি পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জমির দলিল এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে শুক্রবার (২ এপ্রিল) দিঘলিয়া মৌজার সর্দারঘাটে ভৈরব নদীর তীর সংলগ্ন সরকারি খাস জমির উপর ২য় পর্যায়ের ৩০টি ঘর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে নির্মিত হবে ১০টি ঘর। বাকি ২০ ঘর নির্মিত হবে অন্য স্থানে। দিঘলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসাবে এ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহাবুবুল আলম, উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য মোল্যা আকরাম হোসেন, দিঘলিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আহসানউল্লাহ চৌধুরী, উপজেলা ভাইস চেয়াররম্যান মোঃ আলী রেজা বাচা, দিঘলিয়া ইউনিয়ন আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ আনছার আলী প্রমুখ।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!