খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৫ মে, ২০২৪

Breaking News

  আজ খুলছে সব স্কুল-কলেজ
  রাতভর জ্বলছে সুন্দরবন, দেড় কি.মি. এলাকাজুড়ে আগুন
পরিবারে ৯ সদস্যের মধ্যে ৭ জনই প্রতিবন্ধী

সহায় সম্বলহীন কয়রার সবুর মাথা গোজার ঠাঁই চায়

নিজস্ব প্রতিবেদক ও কয়রা প্রতিনিধি

নেই মাথা গোজার ঠাই, দিনের খাবার জোগাড় হয় কোন রকম, পরিবারের সদস্যদের অধিকাংশই প্রতিবন্ধী। এরকম এক অভিশাপের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন কয়রা উপজেলার ফতেকাটি গ্রামের ৬৫ বছরের বৃদ্ধ সবুর শেখ। পেটে ক্ষুধা নিয়ে শীতের রাতে বিশ্রামের আশ্রয়টুকুও রাস্তার পাশের একটি ছোট্ট ঝুপড়িতে। দারিদ্র্যের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন যেন তার কাছে নিতান্তই মরীচিকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার বাগালি ইউনিয়নের ফতেকাটি গ্রামের সবুর শেখ অভাব অনাটনে জর্জরিত হয়ে নিজের জীবিকার অন্বেষণে স্ত্রী ও তিন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে চলে আসে খুলনা শহরে। থাকতো ফুটপাথে। এখানে একটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ছেলে দেখে মেয়েকে বিয়ে দেয়। মেয়ের বিয়ের পর জামাই মেয়েও থাকতে শুরু করে তার পরিবারে। পরে মেয়ের কোলে একে একে এলো ৩ সন্তান, তারাও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি সবুর তার ভাগ্য ফেরাতে পারেনি। জীবিকা সংগ্রহে ব্যর্থ হয়ে ৫ বছর পূর্বে পুনরায় ফিরে আসে তার জন্মভূমি কয়রাতে। সেখানে ফিরে দেখে তার সেই ঘরটাও নাই, দখল নিয়েছে প্রতিবেশি। সেই থেকে রাস্তার ধারে ঝুপড়ি বেধে বসবাস করে আসছে ৯ সদস্যের এই পরিবারটি।

এদিকে বয়সের ভারে সবুর শেখ কাজ করার সক্ষমতা হারিয়ে স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে নিয়ে শুরু করে ভিক্ষাবৃত্তি। মানসিক ভারসাম্যহীন পরিবারটি সারাদিন মানুষের দ্বারে ভিক্ষা করে যা পায়, তা দিয়ে চলে না ৯ সদস্যের সংসার।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গৃহহীনদের জন্য সারাদেশে গৃহ তৈরি করে দিচ্ছে শুনে নতুন একটা ঘর পাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন ওই পরিবার। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভাষ্যমতে জাতীয় পরিচয় পত্রের জটিলতায় সবুরের ভাগ্যে এখনও জোটেনি ঘর।
প্রতিবেশীরা জানান, এই মুহূর্তে সরকারী কিংবা বে-সরকারী পর্যায়ে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসলে অসহায় এই পরিবারটি হয়তো কিছুটা হলেও আলোর মুখ দেখতে পাবে।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আওছাফুর রহমান হালিম খুলনা গেজেটকে বলেন, আমাদের এলাকার মানুষ উনি। একটি ঘরের ব্যবস্থা করতে আমরা চেষ্টা করছি। জাতীয় পরিচয়পত্রে ঠিকানা অন্য স্থানের হওয়ায় আজ (১৪ জানুয়ারি) উপজেলা নির্বাচন অফিসে ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য আবেদন জমা দিয়েছি।

এ বিষয়ে বাগালী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সাত্তার পাড় খুলনা গেজেটকে জানান, কিছুদিন আগে বিষয়টি জেনেছি। বিভিন্ন সময়ে আমরা ত্রাণ সহযোগিতা করেছি। তবে খুলনার ভোটার হওয়ায় আমাদের ইচ্ছা থাকার পরেও অনেক কিছু করতে পারিনা। দ্রুত জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা পরিবর্তনের মাধ্যমে ঘরের ব্যবস্থা করা হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাগর হোসেন সৈকতের কাছে ঘর পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি খুলনা গেজেটকে জানান, বিষয়টি সম্প্রতি আমরা জেনেছি। দ্রুতই ওই পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হবে।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!