খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  চুয়েটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু
  বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনায় আজ জরুরী সিন্ডিকেট সভা আহ্বান

ডুমুরিয়ায় ব্রিজসহ সড়ক নির্মাণ : একবছরের কাজ ঝুলে আছে ৫ বছর

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি

খুলনার ডুমুরিয়ায় গার্ডার ব্রীজসহ টিপনা-সিংগা সড়ক নির্মাণে সময় ধরা ছিল মাত্র এক বছর। সেই এক বছরের কাজ পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। অগ্রগতি মাত্র ৪৫ শতাংশ। বর্তমানে বন্ধ রয়েছে নির্মাণ কাজও। এ অবস্থায় প্রকল্প বাস্তবায়নে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে খুলনা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

স্থানীয়দের অভিমত, প্রকল্প সময় মতো বাস্তবায়ন না হওয়ায় জনগণ শুধু সেবা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে না, কষ্টার্জিত করের টাকারও অপচয় হচ্ছে। তাই এ ব্যর্থতার দায়ে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি ও জবাবদিহির মুখোমুখি করা উচিত বলে তারা মনে করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিংগা নদীর দক্ষিণ পাশে টিপনা গ্রামে অন্তত দুই লক্ষ মানুষ বসবাস করে । উত্তর পাশে সিংগা গ্রামে বসবাস করে অন্তত এক লাখ মানুষ। বিপুল সংখ্যক এ মানুষের যোগাযোগ ও কৃষি পণ্য বাজারজাতকরণ সহজ করতে সিংগা নদীতে গার্ডার ব্রীজ ও সড়ক নির্মাণে প্রকল্প গ্রহন করে সরকার।

ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৬০ মিটার লম্বা ব্রীজ ও ৯০৫ মিটার সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। টেন্ডারে কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আকন ট্রেডিং এবং মাহফুজ খান (জেভি)। ২০১৮ সালের ৬ ডিসেম্বর ওই প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি সম্পন্ন করে কার্যাদেশ দেয়া হয়। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ ছিল ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর। বর্তমানে কাজে অগ্রগতি হয়েছে ৪৫ ভাগ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৮২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। দেখা যায়, মেয়াদ ছিল এক বছর। অথচ পাঁচ বছর আড়াই মাসেও সেই এক বছরের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে কাজ বন্ধ থাকায় বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, নদীতে কিছু পাইলিং ও দক্ষিণ পাশে কিছু অংশে ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় ব্যবহৃত রডে মরিচা চলে এসেছে। তবে সড়ক নির্মাণ কাজ এখনও শুরু হয়নি।

মজিদ শেখ ও আজিজ শেখসহ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রথম দিকে কিছু কাজ হয়। হঠাৎ কাজ বন্ধ করে ঠিকাদারের লোকজন চলে যায়। ৫ বছরে তাদের দেখা মেলেনি আর কোন কাজও হয়নি। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় রোদ-বৃষ্টিতে ব্রীজে ব্যবহৃত রডে মরিচা ধরেছে।

টিপনা গ্রামের বাসিন্দা মনোরঞ্জন জানান, সিংগা গ্রামে প্রাইমারী স্কুল। ছোট্ট ছেলে-মেয়েদের রোজ নৌকায় পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। এ ভোগান্তির শেষ নেই।
সিংগা গ্রামের বাসিন্দা পরিতোষ মন্ডল বলেন, একজন মানুষ গুরুত্বর অসুস্থ হলে তাকে নৌকায় পার করে হাসপাতালে নিতে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অনেক সময় রোগী বাঁচানোই দায় হয়ে পড়ে।

টিপনা গ্রামের বাসিন্দা মোঃ শফিকুল ইসলাম শেখ ও রোকনুজ্জামান বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন বিলম্বিত হওয়ায় জনগণ সুফল বঞ্চিত হচ্ছে। তাই এ ব্যর্থতার দায়ে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি ও জবাবদিহির মুখোমুখি করা উচিত।

ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ রবিউল ইসলাম জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ছিল। পাশাপাশি ফান্ডেরও সংকট ছিল। সেকারণেই প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কাজ বন্ধ রাখায় সম্প্রতি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশ বাতিলের চিঠি দেওয়া হয়। চিঠি পেয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যোগাযোগ করেছে। আলোচনার মাধ্যমে ঠিকাদার ফের কাজ আরম্ভের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এবার কাজ শুরু হলে দ্রুত প্রকল্প সমাপ্তে মনিটরিং বাড়ানো হবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!