খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৫ মে, ২০২৪

Breaking News

  আজ খুলছে সব স্কুল-কলেজ
  রাতভর জ্বলছে সুন্দরবন, দেড় কি.মি. এলাকাজুড়ে আগুন

জুতার ওপর দাঁড়িয়ে জানাজা নামাজ পড়া যাবে?

গেজেট ডেস্ক

কেউ মারা গেলে তার জানাজা নামাজ আদায় করা জীবিতদের জন্য ফরজে কেফায়া। মৃত্য ব্যক্তি জানাজায় জীবিতদের উপস্থিত হওয়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে।

এক হাদিসে হজরত সাদ ইবনু ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, তিনি আবদুল্লাহ ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহুর কাছে বসা ছিলেন। এমন সময় হজরত খাব্বাব রাদিয়াল্লাহু আনহু এসে উপস্থিত হলেন এবং বললেন- ‘হে আবদুল্লাহ ইবনু ওমর! আপনি কি আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর কথা শুনছেন না?

তিনি বললেন, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছেন-

‘যে ব্যক্তি জানাজার সঙ্গে ঘর থেকে বের হয় এবং জানাজার নামাজ আদায় করে, অতঃপর দাফন করা পর্যন্ত জানাজার সঙ্গে থাকে, তাকে দুই ক্বিরাত সাওয়াব দান করা হবে। প্রতিটি ক্বিরাত হবে উহুদ পাহাড় সমতুল্য।

হজরত ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু এ কথা যাচাই করার জন্য হজরত খাব্বাবকে হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার কাছে পাঠিয়ে দিলেন।

হজরত খাব্বাব রাদিয়াল্লাহু আনহু চলে গেলে ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু মাসজিদের কাঁকর থেকে এক মুষ্টি কাঁকর হাতে নিলেন এবং খাব্বাব ফিরে না আসা পর্যন্ত তা হাতে নিয়ে নড়াচড়া করছিলেন।

হজরত খাব্বাব ফিরে এসে বললেন, ‘হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেছেন, হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু ঠিকই বলেছেন। (তখন) হজরত ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তার (হাতে থাকা) কাকর জমিনের উপর ছুঁড়ে মেরে বললেন- ‘আমরা অবশ্যই বহু সংখ্যক ক্বিরাত বরবাদ করে দিয়েছি।’ (মুসলিম)

জানাজা নামাজ পড়ার পদ্ধতি হলো- জানাজার নামাজ আদায়ের আগে মৃতকে কিবলার দিকে জমিনে রাখতে হবে। ইমাম তার বক্ষ বরাবর দাঁড়াবেন। এরপর জানাজার নিয়ত করতে হবে। নিয়ত মনে মনে করলেই যথেষ্ট। মুখে আলাদা করে উচ্চারণ করতে হয় না; তবে কেউ করলে অসুবিধা নেই।

নিয়ত এভাবে করা যায়- ‘আমি জানাজার ফরজে কিফায়া নামাজ চার তাকবিরের সঙ্গে কিবলামুখী হয়ে এই ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে আদায় করছি, আল্লাহু আকবার।’

তাকবির বলে উভয় হাত কান পর্যন্ত ওঠাতে হয়। এরপর নাভির নিচে হাত বেঁধে সানা (নামাজের) পড়তে হয়। তবে সানার মধ্যে ‘ওয়া তাআলা জাদ্দুকা’-এর পর ‘ওয়া জাল্লা সানাউকা’ও পড়তে হয়। এরপর তাকবির বলে দরুদে ইবরাহিম পড়তে হয়। তারপর তাকবির বলে নির্দিষ্ট দোয়া পড়তে হয়। চতুর্থ তাকবির বলে ডানে-বাঁয়ে সালাম ফেরাতে হয়।

জানাজার নামাজ অথবা অন্য কোনো নামাজে যদি জুতা-স্যান্ডেল পায়ে থাকে তাতে কোনো সমস্যা নেই। আল্লাহর রাসূল জুতা পরে নামাজ পড়েছেন হাদিসে প্রমাণিত। তবে মনে রাখতে হবে জুতা-সেন্ডেল অবশ্যই পবিত্র হতে হবে, তাতে কোনো নাপাক বস্তু যেন না থাকে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

হ্যাঁ, যদি জুতা খুলে তার ওপরে দাঁড়ায় এবং নিচের অংশে কোনো নাপাকি লেগে থাকে তাহলে কোনো সমস্যা নেই। ইসলামিক স্কলাররা এমন জিনিসের ওপর নামাজ পড়া জায়েজ ফতোয়া দিয়েছেন, যার ওপরের অংশ পাক এবং নিচের অংশ নাপাক।

সম্ভবত এ সতর্কতার কারণেই কেউ কেউ খালি পায়ে আবার কেউ কেউ জুতার ওপর পা রেখে দাঁড়ান। এ রকমের সতর্কতা যৌক্তিক। হ্যাঁ, জুতা যদি পবিত্র হয়, তাহলে জুতা পরে নামাজ পড়লে কোনো সমস্যা হবে না।

(আল-মুহিতুল বোরহানি : ২/২০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া : ২/৩১; আল-বাহরুর রায়িক : ২/১৭৯; হাশিয়াতুত তাহতাবি আলাল মারাকি, পৃষ্ঠা ৩১৯; রদ্দুল মুহতার : ১/৪০২)

খুলনা গেজেট/ এএজে




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!