খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৫ মে, ২০২৪

Breaking News

  মিল্টন সমাদ্দারের প্রতারণায় সহযোগী ছিলেন তার স্ত্রী : ডিবি প্রধান
  জনগণের ভরসাস্থল অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন সেনাবাহিনী : প্রধানমন্ত্রী

গণপরিবহন বন্ধে ট্রেনে ব্যাপক ভিড়, দুর্ভোগ চরমে

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোর রেলস্টেশনের দিকে ছুটছেন দূর দুরান্তের যাত্রীরা। নিদির্ষ্ট গন্তবে যেতে এখন ট্রেনের বিকল্প নেই। বিপদে পড়া মানুষের এখন ট্রেনই একমাত্র ভরসা। এ কারণে ট্রেন স্টেশনে সকাল থেকে গভীররাত পর্যন্ত মানুষের ব্যাপক ভিড়। আর বাসস্ট্যান্ডগুলো পরিবহন শ্রমিকদের দখলে রয়েছে। সেখান থেকে রোববারও কোন বাস ছেড়ে যায়নি।

দেশে ডিজেলের ব্যাপক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ও গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে তৃতীয় দিনের মত যশোরে চলছে পরিবহন ধর্মঘট। এ ধর্মঘটের কারণে যশোর থেকে চলাচলরত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি রুটে যানবাহনের চাকা ঘুরছে না। যশোরের প্রতিটি বাসস্ট্যান্ডে দেখা গেছে যাত্রীদের ভিড়। এতে যাত্রীরা পড়েছে ব্যাপক দুর্ভোগে।

রোববার সকালে যশোরের বিভিন্ন সড়কে রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন বিআরটিসির কয়েকটি বাস ও ট্রেন ছাড়া কোনো যানবাহন চোখে পড়েনি। তবে ইঞ্জিনচালিত যান নছিমন, করিমন, ভটভটি, মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক চলাচল করতে দেখা গেছে। যাত্রীরা যাতায়াতের জন্যে অটোরিকশা বা ইজিবাইক বেছে নেয়ায় এসব পরিবহনে ভাড়া বেড়ে গেছে।

তবে এসব গাড়িগুলো চলাচলেও বাধা সৃষ্টি করছে পরিবহন শ্রমিকরা। তারা শহরের মনিহার, মুড়লী, শংকরপুর বাস টার্মিনাল, চাঁচড়া চেকপোস্ট, পালবাড়িমোড় ও খাজুরা বাসস্ট্যান্ডে ব্যারিকেড সৃষ্টি করছে। একইসাথে ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস চলাচলকারীদের সাথে অশোভন আচরণ করছে বলে অনেকে অভিযোগে জানিয়েছেন।

এছাড়া, বিভিন্ন রুটের ট্রেনে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। এদিন সকাল থেকেই স্টেশনের প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে ও টিকিট কাউন্টারে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। যাত্রীদের ট্রেনের টিকিট না মিললেও বগিগুলোতে মানুষ দাড়িয়ে গাদাগাদি করে তাদের গন্তব্যে ছুটে চলেছে।

যশোর রেলস্টেশনে দেখা যায়, যাত্রী বেশি হওয়ায় অনেকেই কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কিনতে পারছেন না। আবার টিকিট পেলেও ট্রেনে উঠতে পারছেন না অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে। শনিবার রাতে ঢাকামুখী ট্রেনে অনেক যাত্রী উঠতেই পারেনি। ট্রেনটি পাঁচ মিনিট দাড়িয়ে থাকার পর তাতে সব যাত্রী উঠতে না পারায় সেটি ছেড়ে দেয়। ফলে নারী শিশুসহ ৪০ জন যাত্রী এ ট্রেনে উঠতে পারেননি।

যশোর রেলস্টেশনে দায়িত্বে থাকা একজন কর্মকর্তা জানান, দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় স্টেশনে যাত্রীর চাপ বহুগুণে বেড়েছে। এটা সামাল দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

ট্রেন যাত্রী ব্যবসায়ী ইবাদুল হোসেন জানান, তার গ্রামের বাড়ি যশোরে অসুস্থ মাকে দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু ধর্মঘটের কারণে ঢাকায় ফিরতে পারছেন না। দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে খাজুরা থেকে যশোর রেলস্টেশনে আসেন। কিন্তু ট্রেনের টিকিট পাননি। তাছাড়া, মানুষের ভিড় ঠেলে ট্রেনে উঠতে পারা কঠিন ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।

যশোরের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, এদিনও সকাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়েনি। বাস বন্ধ থাকায় বেশি বিপাকে পড়েছেন চাকরিজীবী ও হাসপাতালে আসা রোগী এবং তাদের স্বজনরা। বাস না থাকায় বিকল্প হিসেবে অটোরিকশা ও ইজিবাইকে যেতে হচ্ছে তাদের।

এ বিষয়ে যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু বলেন, ‘ডিজেলের মূল্য বাড়ানো হলে গাড়ি ভাড়াও বাড়াতে হবে। তা না হলে পরিবহন চালানো অসম্ভব ব্যাপার হয়ে উঠবে। এ নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।’

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!