খুলনা, বাংলাদেশ | ২২ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৫ মে, ২০২৪

Breaking News

  মিল্টন সমাদ্দারের প্রতারণায় সহযোগী ছিলেন তার স্ত্রী : ডিবি প্রধান
  জনগণের ভরসাস্থল অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন সেনাবাহিনী : প্রধানমন্ত্রী

ইতিকাফের অর্জন

মুফতি সাআদ আহমাদ

দেখতে দেখতে রমজানের দু’দশক শেষ প্রায়। শেষ দশকের দারপ্রান্তে দাড়িয়ে নাজাতের শুভক্ষণের অপেক্ষায় সবাই। বর্তমান করোনা পরিস্থিতে না চাইতেই ঘর বন্ধি অলস সময় পার করতে হচ্ছে। তবে চাইলে এ সময়টা ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে অবস্থান করা যেতে পারে। আর এটাই হবে এসময়ের সবচেয়ে উত্তম ব্যবহার। ইতিকাফ সে সকল আমলের অন্যতম যা প্রিয় নবীজি সা. তার জিবদ্দশায় কখন ছাড়েননি।

এ প্রসঙ্গে ইমাম যুহরী রাহ. বলেন-
বড় আশ্চর্যের বিষয়, মানুষ কিভাবে ইতিকাফ ছেড়ে দেয়! অথচ রাসুল সা. বিভিন্ন আমল কখন করতেন আবার কখন ছাড়তেন। কিন্তু ইতিকাফ মৃত্যু পর্যন্ত কখন ছাড়েননি। (উমদাতুল ক্বারী-১২/১৪০)

গবেষনার আলোকে দেখা যায় প্রিয় নবীজি সা. রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পর থেকে তিন বছর ব্যতীত কখন ইতিকাফ ছাড়েননি। বদরের যুদ্ধের বছর, মক্কা বিজয়ের বছর এবং একবার উম্মাহাতুল মুমিনীনদের মাঝে নবীজির সাথে ইতিকাফ করা নিয়ে সামঞ্জস্যতা না হওয়ার কারণে। তথাপি তিনি রমজানের পর শাওয়াল মাসে তা কাযা করেছিলেন। এ থেকে প্রমাণিত হয় প্রিয় নবীজি সা. ইতিকাফের ব্যাপারে কতটা দায়িত্বশীল ছিলেন।
এছাড়াও ইতিকাফকারীর আরো কিছু প্রাপ্তির বর্ণনা কুরআন ও সুন্নাহের আলোকে নিন্মে তুলে ধরা হল।
সর্বক্ষণিক মসজিদে থাকা: মসজিদ আল্লাহর ঘর। আর মসজিদে অবস্থানকারী আল্লাহর প্রতিবেশী। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে ৭ ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ তায়ালা হাশরের ময়দানে আরশের ছায়ায় আশ্রয়দান করবেন। তাদের একজন হবে যার অন্তর সর্বদাই মসজিদের সাথে লেগে থাকত। যেহেতু ইতিকাফকারী সর্বদাই মসজিদে অবস্থান করে। সুতরাং সে উক্ত ব্যক্তিদের দলভুক্ত হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

ইতিকাফকারীর জন্য ফেরেশতাদের দোয়া: সহিহ বুখারী শরীফের এক বর্ণনায় এসেছে যে, কেউ যখন ফরজ নামাজ শেষ করে পরবর্তী নামাজের অপেক্ষায় থাকে। তার জন্য ফেরেশতাগণ রহমত ও মাগফিরাতের দোয়া করতে থাকে। সুতরাং ইতিকাফকারী ব্যক্তি যেহেতু সর্বদা এক নামাজের পর অপর নামাজের অপেক্ষায় অপেক্ষমাণ থাকে অতএব তার জন্যও ফেরেশতাদের রহমত ও মাগফিরাতের দোয়া অবধারিত।

ইতিকাফকারীর জন্য ২৪ঘন্টা নেকী লেখা হয় প্রিয় নবীজি সা. বলেন নামাজের অপেক্ষায় মসজিদে এসে অবস্থান করা নামাজের মতই। অর্থাৎ জামাতে নামাজের অপেক্ষায় অপেক্ষা করার দ্বারা নামাজ পড়ার নেকী পাওয়া যায়। সুতরাং ইতিকাফকারী ব্যক্তি যখন একের পর এক নামাজের অপেক্ষায় অপেক্ষমান থাকে তার জন্যও সারাক্ষণ নামাজী ব্যক্তির সমপরিমাণ একই লেখা হতে থাকে।

এছাড়া ফজরের পর হতে সূর্যোদয় পর্যন্ত নামাজের জায়গায় অবস্থান করার দ্বারা একটি কবুল হওয়ার ওমরার নেকি পাওয়া যায়। চাইলে এতেকাফকারীর জন্য তা অর্জন করাও খুবই সহজ। এছাড়া গুনাহমুক্ত থাকা। লাইলাতুল কদর অন্বেষণ এবং আল্লাহর ঘরে ফেরেশতাদের প্রতিবেশী হয়ে থাকার মহা গৌরব অর্জন করা সত্যিই একজন ইতিকাফকারীর অনেক বড় প্রাপ্তি।

(লেখক : শিক্ষক, ইমদাদুল উলুম রশিদিয়া মাদরাসা, ফুলবাড়ী গেট, খুলনা )

খুলনা গেজেট/এমএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!