খুলনা, বাংলাদেশ | ২৩ বৈশাখ, ১৪৩১ | ৬ মে, ২০২৪

Breaking News

  চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে ট্রাকের সঙ্গে ভটভটির মুখোমুখি সংঘর্ষে যুবক নিহত
  রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ২

আ.লীগ নেতার বাড়িতে ডাকাতি, হাত-পা বেঁধে স্বর্ণ-টাকা লুট

গেজেট ডেস্ক 

নড়াইল সদরের মাছিমদিয়ার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হাসানুজ্জামানের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সশস্ত্র ডাকাত দল বাড়ির সদস্যদের হাত-পা বেঁধে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ কোটি টাকার মালামাল লুট করে নেয়। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে ব্যবসায়ীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দোতলা বাড়িতে বাউন্ডারি ওয়ালের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা ছিল। নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকা সত্ত্বেও রাতের কোনো এক সময় ওয়াল টপকে ডাকাতদল বাড়ির চত্বরে প্রবেশ করে। এ সময় দোতলা ভবনের নিচতলার জানালার গ্লিল কেটে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। সাত থেকে আটজনের মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাত দল হাসানুজ্জামানের দোতলার শয়নকক্ষে ঢুকে তাকে ও তার স্ত্রীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। এ সময় ঘরে থাকা আলমারি থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকারসহ একটি বন্দুক, একটি রিভলবার, ২৯ রাউন্ড গুলি লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতদল বাড়ি থেকে যাওয়ার পর নেতার চিৎকারে আশপাশের প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে।

নড়াইল জেলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হাসানুজ্জামান বলেন, রাত ২টায় ফুটবল খেলা দেখছিলাম। আনুমানিক রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওয়াশরুম থেকে এসে শুয়ে পড়ি। হঠাৎ শব্দে ঘুম ভেঙে যায়, দেখি বেডরুমে আমার গলায় রামদা ধরে বলে, আমরা ডাকাত শব্দ করলে জানে মেরে ফেলব। পরে আমার স্ত্রী ও আমাকে মুখ, হাত-পা বেঁধে ফেলে। আলমারির চাবি চায়, আমি বলি চাবি কোথায় আমি জানি না? তারা নিজেরা সব উল্টে-পাল্টে চাবি খুঁজে নিজেরাই আলমারিতে থাকা (সার ও তেল পাম্পের ক্যাশ) নগদ আনুমানিক ত্রিশ থেকে বত্রিশ লাখ টাকা, ছেলে মেয়ের বিয়ের জন্য বানানো পয়ত্রিশ ভরি স্বর্ণালংকার, লাইসেন্স করা দুইটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ গুলি নিয়ে যায়। এ সময় যাওয়ার পথে সিসি ক্যামেরার ডিভিআর ডিভাইসটি খুলে নিয়ে বাড়ির প্রধান ফটকের তালা খুলে আনুমানিক ১০ থেকে ১২ জনের ডাকাত দল বের হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, আনুমানিক ত্রিশ মিনিটের মধ্যে তারা কাজ সেরে বের হয়ে যায়। ভাষাগত কারণে আমি বুঝেছি তারা নড়াইলের স্থানীয়।

হাসানুজ্জামানের ভাই ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমার ভাইয়ের বাড়ি থেকে ৫০ গজ দূরে আমার বাড়ি। বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র ও এত নিরাপত্তা থাকার পরেও এ ধরনের দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটাতে পারলে সাধারণ ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা কোথায়? জেলার আইনশৃঙ্খলা চরম অবনতি হয়েছে। দুই তিনদিন আগে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর কবিরের বাড়িতে ডাকাত দল এসেছিল, টের পেয়ে ফাঁকা গুলি করায় ডাকাত দল পালিয়ে যায়। ভাইয়ের চিৎকার শুনে ফজরের আযানের আগে আমি দেহরক্ষীসহ আমার বাড়ি থেকে বের হই, খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। আগ্নেয়াস্ত্রগুলো উদ্ধারসহ ডাকাতদের গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানাই।

পুলিশের খুলনা রেঞ্জ অতিরিক্ত ডিআইজি আতিকুর রহমান মিয়া, পুলিশ সুপার (এসপি) সাদিরা খাতুন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোষ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজামুদ্দিন খান নিলু সহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিআইডি, পিবিআই, ডিবিসহ পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছেন, এই ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!