খুলনা বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার প্রাঙ্গণে জমে উঠেছে একুশের বইমেলা। মেলায় দর্শনার্থী এবং বইপ্রেমীদের ভিড়ে মুখরিত মেলা প্রাঙ্গণ। বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলার পর ঢাকার বাইরে খুলনায় মাসব্যাপী এ বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়। খুলনায় ২০০৫ সাল থেকে স্থানীয় একটি সাহিত্য সংগঠনের উদ্যোগে বইমেলার যাত্রা শুরু হয। পরবর্তীতে ২০১০ সাল থেকে জেলা প্রশাসন এবং বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগারের আয়োজনে এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ।
মেলায় বই বিক্রির পাশাপাশি মঞ্চে প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশীয় সংস্কৃতির নানান ধরনের পরিবেশনা, আবৃত্তি, বইয়ের মোড়ক উন্মোচন। ১ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের মেলায় ১’শ টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ৮০ টি স্টল বই বিক্রির জন্য বাকি ২০ টি স্টল কুটির শিল্প, খাবার এবং অন্যান্য।
মেলার আয়োজক কমিটির সদস্য মোঃ সাইফুল ইসলাম মল্লিক খুলনা গেজেটকে বলেন, মেলার প্রথম দিন থেকে প্রচুর দর্শকের আগমন ঘটছে। উঁপচে পড়া ভিড়। প্রচুর বই বিক্রি হচ্ছে। ক্রমাগত নতুন নতুন বই আসছে। মেলায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে। পুরো মেলাটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেএমপি’র সদস্যরা সিসি ক্যামেরায় নিয়ন্ত্রণ করছেন। সাথে পুলিশ এবং সিটিএসবির সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। মাসব্যাপী বই বিক্রির সাথে মঞ্চে প্রতিদিনকার অনুষ্ঠানে থাকে একটি সুন্দর পরিবেশনা। এরপর ১টি সাহিত্য, ১টি আবৃত্তি সংগঠন এবং সন্ধ্যার পর ২টি সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনা। মেলার শেষ ৫ দিন খুলনার বিশিষ্ট পাঁচজন প্রাবন্ধিক মঞ্চে তাদের প্রবন্ধ পাঠ করবেন। এবং সেই প্রবন্ধের উপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয। এটি অত্যন্ত জ্ঞানভিত্তিক এবং শিক্ষনীয়। যেদিকে আমরা সেমিনার পর্ব বলি।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোণার কারণে গত তিন বছর আমরা পূর্ণাঙ্গভাবে মেলা করতে পারিনি। এবারের মেলাটি একটি বিশেষ এবং আশাতীতভাবে সফল এবং আমাদের প্রত্যাশা বাকি দিনগুলো সফলতার সাথে মেলা শেষ হবে। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ছিলো মেলার ১৭ তম দিন।
দিনটি সরকারি ছুটি হওয়াই দুপুরের পর থেকে দর্শনার্থী এবং বইপ্রেমীদের পদভারে মুখরিত হতে থাকে মেলা প্রাঙ্গণ। বিকাল গড়ানোর সাথেই মেলায় উঁপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয়। মেলায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, মহিলা এবং শিশুদের উপস্থিতি ছিলো লক্ষণীয়। মেলায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতি এবং বই বিক্রিতে খুশী স্টলের বই বিক্রেতারা। তবে তাদের কিছু অভিযোগও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বই বিক্রেতা খুলনা গেজেটকে বলেন, এই মেলাটা অন্যান্য মেলার মতো নয়। বইমেলায় শুধু বইই থাকবে। বই পড়ার মাধ্যমে মানুষের মনুষ্যত্ব এবং মূল্যবোধ তৈরি হয়। মেলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কিছু স্টল বরাদ্দ দিয়ে মেলার পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। আপনারা দেখেন মেলার ভেতর ছেলেদের কোর্টের স্টলও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আগামীতে কর্তৃপক্ষ যেন দৃষ্টি থাকে এই বিষয়গুলির উপর।