খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ইসকন নেতা চিন্ময় দাসকে বিমান বন্দরে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি
  কক্সবাজারের টেকনাফ সমুদ্র সৈকতে গোসলে নেমে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার
  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড

তালায় ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের অর্ধকোটি টাকা হাওয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক  সাতক্ষীরা ও তালা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরায় তালায় ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং শাখায় উদ্যোক্তা আতাউর রহমান এলিট ও তালা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্যের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগাযোগে গ্রাহকদের প্রায় অর্ধ-কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এঘটনার পর এজেন্ট ব্যাংকটির উদ্যোক্তা আতাউর রহমান এলিট পালিয়েছেন ও পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্য কৌশলে অন্যত্র বদলী হয়েছেন।
তালার ঘোনা নারানপুরের কাশেম খাঁর স্ত্রী আসমা বেগম জানান, তিন বছর আগে তিন লাখ টাকা পোস্ট অফিসে রেখেছিলাম ফিক্সড-ডিপোজিট করে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুনরায় আরও তিন বছরের জন্য চার লাখ টাকা আমাদের দুই ভাইবোনের নামে রাখার জন্য পোস্ট মাস্টারকে বলি। এসময় তিনি ব্যাংক এশিয়াতে ইজি ফরমে টাকা জমা দেওয়ার পরামর্শ দেন। গেল  ৮  ফেব্রুয়ারি আমার ভাই সোহাগের নামে দুই লাখ টাকা এবং আমার নামে দুই লাখ টাকা জমি দিয়ে পোস্ট মাস্টারকে রিসিভ দেখাই। তখন তিনি জানান, দুদিন পরে বই নিয়ে যাবেন। দুদিন পরে গেলে বলে যে, বই এখনও আসেনি, আরও এক সপ্তাহ সময় লাগবে। এভাবে তিনি আমাদের ঘোরাতে থাকে। পরে শুনি সে নাকি বদলী হয়ে গেছে।
একই ধরণের কথা বলেন, চরগ্রামের মৃত আলাউদ্দিন শেখের মেয়ে ফারজানা খাতুন ও তার মা আলেয়া বেগম। তাদের থেকে ৫ই ফেব্রুয়ারি একই ভাবে ভুয়া ভাউসারের মাধ্যমে ৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে জানান।
একইভাবে টাকা জমা রাখতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছেন শাহাপুর গ্রামের সুফিয়া বেগম, হরিশ্চন্দ্রকাটি গ্রামের মান্নান গাজীর স্ত্রী কামেলা বেগম, হাজরাকাটি গ্রামের নিমাই কুমার শীল।
শাহাজাৎপুর গ্রামের শুকুর আলী গাজী জানান, গত ২ ফেব্রুয়ারি তিন বছর মেয়াদে চার লাখ টাকা রাখতে গিয়েছিলাম পোস্ট অফিসে। এসময়ে পোস্ট মাস্টার এলিটের কাছে নিয়ে যায়। পরে এক সপ্তাহ পর বই নিতে গেলে পোস্ট মাস্টার বলেন এখনও হয়নি। এর তিন সপ্তাহ পর তাদের আর পোস্ট অফিসে যেয়ে পাওয়া যায়নি। তিনি এবিষয়ে তালা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১৪ সালে আতাউর রহমান এলিট তালা পোস্ট অফিসের উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করেন, পরে ২০২০ সালে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট হিসেবে আর্থিক লেনদেন শুরু করেন। এবিষয়ে জানার জন্য যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে  আতাউর রহমান এলিটের ফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে কথা বলা  সম্ভব হয়নি।
তালা পোস্ট অফিসের সাবেক পোস্ট মাস্টার সুদীন কুমার বৈদ্য বলেন, টাকা আত্মসাৎ এর এসব বিষয় ফাও কথা। আমার কাছে গ্রাহকরা আসলে আমি অনলাইন ফরম পূরণের জন্য এলিটের কাছে পাঠাতাম। ওখানে লেনদেন করলে সেটা তাদের ব্যাপার। পোস্ট অফিসের সাথে ব্যাংক এশিয়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
তালা পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মধুসূদন বাছাঢ় বলেন, আমি সদ্য যোগদান করেছি। গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ এর ব্যাপারে অনেকে অভিযোগ নিয়ে আসছে, কিন্তু কত টাকা আত্মসাৎ হয়েছে এবিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।
ব্যাংক এশিয়ার বিজনেস অফিসার শারাফাত হোসেন বলেন,  প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকা নানাভাবে এজেন্ট ব্যাংকিং এর মাধ্যমে খোয়া গেছে বলে আমরা ধারণা করছি। গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। টাকা আত্মসাৎ এর বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!