১১ দিন পার হলেও খুলনা জেনারেল হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট প্রকাশ কুমার দাসের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। সিভিল সার্জনের পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ জানানো হলেও এখনো কোন মামলা হয়নি। স্বামীর খোঁজ না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরী করতে গেলে পুলিশ সেটিও গ্রহণ করেনি।
প্রকাশ কুমার দাসের স্ত্রী মাধবী লতা খুলনা গেজেটকে জানান, ২০১০ সালে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে প্রকাশের ও শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে চাকরী হয় তার (মাধবী লতা)। শুরুতে তাদের তেমন ভাল যাচ্ছিল না। আয় বৃদ্ধির জন্য প্রকাশ নগরীর খালিশপুর মুহসীন মোড়ে জেনেটিক ডায়াগনষ্টিক সেন্টার খোলেন। সেখানে ডাক্তারদের অতিরিক্ত কমিশন দেওয়ার কারণে এক মাসের মাথায় ব্যবসাটি বন্ধ করে দেয় প্রকাশ। এরপর সিটি বাইপাসে মোস্তর মোড়ে ১০ শতক জমি ব্যাংকে বন্ধক রেখে সোনাডাঙ্গার করিমনগরের সামনে একটি গাড়ির শো-রুম দেন প্রকাশ। জেনেটিক ইন্টারন্যাশনালের শো-রুমের একটি গাড়ি বিক্রি করে আরও একটি গাড়ি এনে ব্যবসা করতেন প্রকাশ। হাসপাতালের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি তিনি পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছেন বলে দাবি মাধবী লতার।
তিনি আরও জানান, অফিসের কোন বিষয় নিয়ে তার সাথে আলোচনা করত না প্রকাশ। তবে কয়েকদিন ধরে তার মন খুব খারাপ ছিল বলে তিনি জানিয়েছেন। প্রকাশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে, সে এ টাকা আত্মসাত করেনি বলে দাবি স্ত্রী মাধবী লতার। যদি সে অপরাধ করে থাকে তাহলে প্রমাণ সাপেক্ষে তার বিচার আমি কামনা করি।
প্রকাশের স্ত্রী মাধবী লতা জানান, দু’মেয়ে নিয়ে অসহায়ের মতো ১১ দিন অতিবাহিত হচ্ছে। সম্ভাব্য তার পরিচিতি বন্ধু বান্ধবসহ আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে ফোন করে যোগাযোগ করা হয়েছে। তার সন্ধান মেলেনি। গত সপ্তাহে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে শোকজের একটি চিঠি আমার ঠিকানা বরাবর পাঠানো হলে সেটি গ্রহণ করা হয়েছে। পরে প্রকাশকে অফিসে উপস্থিত হওয়ার জন্য আরও একটি পত্র পেরণ করা হয়।
এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ নাজমুল হাসান খুলনা গেজেটকে জানান, লিখিত অভিযোগ ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এখনও সেখান থেকে অনুমতি আসেনি। অনুমতি পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাধারণ ডায়েরীর বিষয়ে খালিশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দু’দিন আগে প্রকাশ কুমার দাসের স্ত্রী মাধবী লতা থানায় এসেছিলেন। মাধবী লতা মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন তাকে। যেহেতু তিনি খুলনা সদর থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়েছেন তাই ওই থানার সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন তাকে।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ভাইরাস টেস্টের ২ কোটি ৫৮ লাখ ৯৭ হাজার টাকা গরমিল হওয়ার পর ওই হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট প্রকাশ কুমার দাস আত্মগোপনে চলে যান। গত ১১ দিনেও তার খোঁজ মেলেনি।
খুলনা গেজেট/এএ