যশােরের চৌগাছা হাসপাতালে ডাক্তার-নার্স লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা মানববন্ধন ও কর্মবিরতি পালন করেছে। মঙ্গলবার সকালে চৌগাছা-যশাের সড়ক সংলগ হাসপাতালের সামনে এই মানববন্ধন ও কর্মবিরতি অনুষ্ঠিত হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সােমবার পৌরসভার বিশ্বাস পাড়ার এখতিয়ারের তিন বছরের শিশুকন্যা ইসরাত জাহানের নাকের ভিতর কুলের বিচি ঢুকে যায়। পরিবারপর লােকজন বুঝতে পেরে এ দিন রাতে চিকিৎসার জন্য শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের জরুরী বিভাগের স্বেচ্ছাসেবী এক কর্মচারী নাক থেকে কুলের বিচি বের করার চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে শিশুটি কানাকাটি শুরু করে। রক্তক্ষরণকে কেন্দ্র করে জরুরী বিভাগ উপস্থিত উপ-স্বাস্থ্য সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাঃ আশরাফুনাহার ও জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত ডাঃ সােহাগ হাসানের সাথে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শিশুটির পিতা তাদের উপর চড়াও হওয়ার পাশাপাশি দু’চিকিৎসককে ধাক্কা দিয়ে লাঞ্চিত করেন। এ ঘটনায় ফাহিম নামের এক কর্মচারী প্রতিবাদ করলে তাকেও লাঞ্চিত করা হয়।
এ ঘটনায় ডাঃ সােহাগ হাসান এখতিয়ারের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করেন। মামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সকালে বিশ্বাসপাড়া থেকে থানা পুলিশ এখতিয়ারকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করে।
হাসপাতালে হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার(৩০ জানুয়ারি) সকালে হাসপাতালের পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। প্রায় ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জরুরী চিকিৎসা সেবা ছাড়া হাসপাতালের সকল কার্যক্রম বন্ধ ছিল। কর্মবিরতির ফলে বেশকিছু রােগী ভাগান্তির শিকার হন বলে আগত রােগীরা জানান।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ লুৎফুনাহার লাকী, ডাঃ সুরাইয়া ইয়াসমিন, ডাঃ ইয়াসির আরাফাত, ডাঃ আকিব হাসান, ডাঃ সােহাগ, ডাঃ লুৎফুন নেছা লতা, ডাঃ সঞ্চিতাসহ কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীবৃন্দ।
বেলা ১১ টায় মানববন্ধনের বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থালে হাজির হন যশােরের সিভিল সার্জন ডাঃ বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস। এ সময় তিনি সকলকে শান্ত থাকার অনুরােধ করেন এবং প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করলে মানববন্ধন ও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়।
এ ব্যাপার হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ লুৎফুনাহার লাকী জানান, হাসপাতালে হামলার ঘটনাটি সত্যি দুঃখজনক। বিষয়টি হাসপাতালের উর্ধতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা যথাযথ ব্যবস্থ্যা গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছেন। কতৃপক্ষের নির্দেশে মামলা করা হয়েছে।
থানার অফিসার ইনচার্জ ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, ঘটনাটি জানার পরপরই আমরা হামলাকারীকে আটক করতে পারতাম। তারপরও শিশুটির চিকিৎসা ও মানবিকতার কারনে সােমবার রাতে আটক করা হয়নি। মঙ্গলবার মামলা হবার পর এখতিয়ারকে গ্রেফতার পূর্বক আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টিএ