প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তার ৫ লাখ টাকার চেক পেয়েছে হাত পা বিহীন জন্ম নেওয়া অদম্য মেধাবী যশোরের মণিরামপুর উপজেলার লিতুন জিরা। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে সে চেক গ্রহণ করে।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তার কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া লিতুন জিরার হাতে চেক তুলে দেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী, অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক আমিনুদ্দিন, মিলন ঘোষাল, লিতুন জিরার বাবা প্রভাষক হাবিবুর রহমান, মা জাহানারা খাতুন প্রমুখ।
এরআগে গত ৩ মার্চ গোলাম রব্বানীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করার ইচ্ছে নিয়ে চিঠি লেখেন লিতুন জিরা। তখন লিতুন জিরার লেখাপড়ার জন্য আর্থিক সহায়তা দিতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন গোলাম রব্বানী।
এরপর প্রধানমন্ত্রী নিজের ‘ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে লিতুন জিরার জন্য পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ দেন। গত ২৮ মার্চ ডাক যোগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পান লিতুন জিরার বাবা। চিঠি পেয়ে তিনি মেয়েকে নিয়ে গত শনিবার রাতে ঢাকায় যান।
লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, রবিবার সকালে মেয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহায়তার পাঁচ লাখ টাকার চেক পেয়েছি। মেয়ের ডাক্তারি পড়ার শখ। তার লেখাপড়ার পিছনে এ টাকা ব্যয় করবো। হাবিবুর রহমান আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে নিজের গল্প শোনাতে চেয়েছিলো লিতুন জিরা। ব্যস্ততার কারণে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) লিতুন জিরার সাথে দেখা করতে পারেননি।
২০০৮ সালে মণিরামপুরের শেখপাড়া খানপুর গ্রামে হাবিবুর-জাহানার খাতুনের কোল জুড়ে আসে লিতুন জিরা। ছেলে ইশতিয়াক আহমেদ সাজুর পর জন্ম হয় হাত পা বিহীন মেয়েটির। লিতুন জিরার দুই পা নেই। নেই দুই হাতের কনুইয়ের নিচের অংশ।
প্রতিবন্ধী হলেও ছোটবেলা থেকে লেখাপড়ার খুব আগ্রহ লিতুন জিরার। ডান হাতের বাহুর আগা দিয়ে কলম চোয়ালে চেপে ধরে লিখে ২০১৯ সালে স্থানীয় খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সে পিইসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ ও বৃত্তি পায়। বর্তমানে সে গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৮ম শ্রেণিতে পড়ছে। এ বিদ্যালয়ের ৬৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে লিতুন জিরা প্রথম। নিয়মিত বাবা-মার কোলে চড়ে সে ক্লাসে যায়।
লিতুন জিরার বাবা মণিরামপুরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এআর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক। ২০ বছর যাবৎ তিনি বিনা বেতনে সেখানে কর্মরত রয়েছেন। তিনি উপজেলা তাঁতীলীগের সাধারণ সম্পাদক।
খুলনা গেজেট/ এস আই