স্বেচ্ছাসেবক লীগ যশোর শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ঘিরে শহরে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। ১২ জুলাই এ সম্মেলন ঘিরে শহরের প্রধান প্রবেশ পথগুলোতে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন তোরণ। ঈদগাহ ময়দানে মঞ্চ নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ। বিভিন্ন ভবন ও প্রাচীরে শোভা পাচ্ছে ফেস্টুন, প্যানা ও দৃষ্টিকাড়া বিলবোর্ড।
স্থানীয় ও জাতীয় নেতৃবৃন্দের ছবি সম্বিলিত এসব প্যানা-ফেস্টুনে শোভা পাচ্ছে পদ প্রত্যাশীদের ছবিও। শীর্ষ পদ দখলে রীতিমত দৌঁড়-ঝাপ শুরু হয়ে গেছে। বছর কয়েক আগেও ‘স্বেচ্ছাসেক লীগ’ নিয়ে যাদের হাসি-মশকরা করতে দেখা গেছে, তারাই এখন পদ দখলের মহড়ায় মেতে উঠেছেন। ছাত্রলীগের সাবেক কিছু নেতাও পদ প্রত্যাশী হয়ে ছুটাছুটি করছেন। এ সম্মেলনে ২৫ হাজারের বেশি মানুষের সমাগম হবে বলে প্রত্যাশা করেছেন প্রস্তুতি কমিটির নেতৃবৃন্দ।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন ঘিরে যশোর শহরে রীতিমত সাজ-সাজ রব উঠেছে। উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। ইলেকশন নাকি সিলেকশনে কমিটি হবে, তা নিয়েও জোর আলোচনা চলছে। সম্মেলন সংশ্লিষ্টদের ধারণা-সামনে নির্বাচন। সে কারণে ইলেকশনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে গেলে গ্রুপ রাজনীতি মাথা-চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। এ জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সমঝোতার মাধ্যমে একটি ক্লিন ইমেজের কমিটি উপহার দিতে পারেন।
এদিকে, চারস্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হচ্ছে যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে। থাকছে সরকারের ডিজিটাল উন্নয়ন, স্মার্ট বাংলাদেশ প্রচার ব্যবস্থা। এ সম্মেলনে থাকছে কাউন্সিলর, ডেলিগেট ও অতিথি। অন্যান্য সম্মেলনের মতই আলোচনা পর্ব, রুদ্ধদার পর্ব, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের পর্ব, বর্তমান কমিটির আপ টু বটম পোস্টমোর্টেম থাকবে বলেও শোনা হচ্ছে।
বুধবার ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম। সম্মেলনের মূল আকর্ষণ থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু। সাথে থাকবেন আওয়ামী লীগের কেন্দীয় নেতৃবৃন্দ।
এর মধ্যে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে সম্মেলন ইস্যুতে। যশোর সিভিল কোর্ট মোড়, ঈদগাহ, মুজিব সড়কের দড়াটান রোড, বাদশাহ ফয়সাল স্কুলের পিছন এলাকা মনে হচ্ছে ব্যানার ফেস্টুনের বাজার বসেছে। সকল স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকর্মীর ছবি সম্বলিত ব্যানার প্লাকার্ড রয়েছে এসব এলাকায় বিভিন্ন মহলে আলোচনার বিষয়বস্তু দুটি সিলেকশন অথবা ইলেকশন। তবে যাই হোক না কেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ এবার স্বেচ্ছাসেবক লীগের জেলা কমিটিতে পদ পাচ্ছেন না, এটি নিশ্চিত। চলছে জোর লবিং-গ্রুপিং। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক আসাদুজ্জাামান মিঠু ফের সভাপতি হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হওয়ার সুযোগ নেই। হটাৎ লাইম লাইটে চলে এসেছেন যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ূন কবীর তুহিন ও মোস্তফা কামাল। জেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশের পছন্দের তালিকায় গত কয়েকদিন ধরে নামটি নিয়ে জোর আলোচনা হচ্ছে। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন-যুগ্ম আহবায়ক নূরে আলম সিদ্দিকী মিলন ও শেখ ইমামুল কবীরের পাশাপাশি সদর উপজেলার লেবুতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলীমুজ্জামান মিলন ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এসএম নিয়ামত উল্লাহসহ হাফডজন নেতা। শীর্ষ পদ দুটিতে প্রায় একডজন নেতার নাম শোনা যাচ্ছে।
১২ জুলাই সম্মেলনে ৭৫০ জন কাউন্সিলর উপস্থিত থাকবেন। তবে এখনো ডেলিগেটের সংখ্যা নির্ধারণ হয়নি। মঞ্চ কমিটির আহ্বায়ক সমীর কুন্ডু ও সদস্য হিসেবে কাজ করছেন নুর ইমাম বাবুল ও ইব্রাহিম হোসেন।
তারা জানান, মঙ্গলবারই মঞ্চ প্রস্তত হয়ে যাবে। রয়েছে সিসি ক্যামেরা ও ঝড় বৃষ্টিমুক্ত মঞ্চ। সম্মেলন প্রস্তত কমিটির আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান মিঠু, দুই যুগ্ম আহ্বায়ক নুরে আলম সিদ্দীকি মিলন ও শেখ ইমামুল কবীরসহ এক ঝাঁক নেতাকর্মী উপস্থিত থেকে সার্বক্ষণিক সবকিছু তদারকি করছেন।
সম্মেলন বিষয়ে জেলা আহবায়ক আসাদুজ্জামান মিঠু বলেন, এবার স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন হবে উৎসবমুখর। ক্লিন ইমেজের একটি নেতৃত্ব উপহার দেবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সে লক্ষ্যেই তিনি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম