‘কি বলব দাদা। স্বপ্নের ঘরে শান্তিতে আছি! কোন দিন ভাবতে পারিনি, পাঁকা ঘরে বাস করব। সাধ্য না থকালেও সে সাধ পূরণ হয়েছে। জীবনের পড়ন্ত বিকেলে (শেষ বয়সে) এটা আমার জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করি। তিনি আমাকে ঘর দিয়েছেন, জায়গাও দিয়েছেন। দিয়েছেন ঠিকানা।’ বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার সুরশাইল গ্রামে নিজের নামে পাওয়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘরে বসে এমনটাই বলছিলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী দিনোনাথ বিশ্বাস (৬৫)।
তিনি আরও জানান, স্ত্রী মঞ্জুরী বিশ্বাস, ছেলে ভোলানাথ বিশ্বাস, ছেলের বউ ববিতা বিশ্বাস ও দৌহিত্র রাজ কুমারকে নিয়ে তাদের পাঁচ সদস্যর পরিবার। থাকার জন্য আগে পথে পথে ঘুরেছেন। সামান্য টাকা দিয়ে কোন মতে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেছেন। এখন নিজের বাড়িতে বসবাস করেন। তাঁর ভাষায় এটা এক প্রকার স্বর্গীয় শান্তি।
উজ্বল বিশ্বাস (২৪)। স্ত্রী অরন্য বিশ্বাস, মেয়ে পল্লবী বিশ্বাস, বাবা নিত্য বিশ্বাস ও মা শিখা বিশ্বাসকে নিয়ে তাঁরও পাঁচ সদস্যর পরিবার। সেলুনে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সেলুনে কাজ করে যে টাকা আয় করেন তা দিয়ে বাসা ভাড়ার টাকা হয় না। তাই পরিবার নিয়ে এক চাচার আশ্রয় থাকতেন। তিনিও প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ও জায়গা পেয়েছেন। এ জন্য তাঁর বাবা-মা সকাল-সন্ধ্যা প্রধানমন্ত্রীর জন্য আশির্বাদ করেন।
চিতলমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অপূর্ব দাস জানান, শুধু দিনোনাথ বিশ্বাস আর উজ্বল বিশ্বাস নয়। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন-গৃহহীন “ক” শ্রেণীর ৬৭ জন উপকারভোগী ঘর পেয়েছেন। তাঁদের সকলেই শান্তিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাওয়া ঘরে বসবাস করছেন। এর মধ্যে চিতলমারী সদর ইউনিয়নে ২২টি ও কলাতলা ইউনিয়নে ৪৫টি ঘর। প্রথম পর্যায়ের প্রতিটি ঘরের নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ, ৭১ হাজার টাকা ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ৫০টির প্রতিটি ঘরের নির্মান ব্যয় ছিল ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। প্রতিটি ঘরে একটি বারান্দা, দুটি শোবার কক্ষ, রান্নাঘর ও পায়খানা রয়েছে। রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ।
এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিটন আলী বলেন, এটা প্রধানমন্ত্রীর একটি মহতী উদ্যোগ। জেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আমরা মিলে এটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। মহতী এ কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পেরে ধন্য মনে করছি।
খুলনা গেজেট/কেএম