মহান বিজয় দিবস আজ। জাতি মেতে উঠবে বিজয় উৎসবে। সর্বত্র উড়বে লাল-সবুজের পতাকা। আনন্দ উৎসবে কাটাবে দেশের ১৬ কোটি মানুষ। বিজয়ের এই গর্ব বুকে লালন করেন আইন মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী সেলিনা আক্তার। তার বড় পাওনা, বাবা মুক্তিযোদ্ধা। তার ধমনিতে বীরের রক্ত।
সেলিনা আক্তার ইতিমধ্যেই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন। পড়ছেন খুলনা সিটি ‘ল’ কলেজে। প্রত্যাশা আইনজীবী হবেন। সাউথ সেন্ট্রাল রোডে বসবাস করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল হাকিম তালুকদারের সন্তান। বাবার জীবনী তুলে ধরে বলেন, ১৯৪৭ সালের ১ জানুয়ারি ঝালকাঠি মহাকুমার বাহিরদিয়া গ্রামে বাবা জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে বিয়ে করেন। মার্চের অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়, তারপরে মুক্তিযুদ্ধ। ঝালকাঠির বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্র-যুবকরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। বাবা তাদের সাথে বাহিরদিয়া গ্রামেই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের এ দলটি বাহিরদিয়া গ্রামে প্রশিক্ষণ এবং এর আশপাশে যুদ্ধ করেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
বাবার যুদ্ধ জয়ের স্মৃতি চারণ করতে যেয়ে সেলিনা বলেন, ঝালকাঠির বাহিরদিয়ায় রাজাকার ক্যাম্প দখল করতে যেয়ে পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায়ও তিনি সতীর্থদের সহযোগিতা করেছেন। সুস্থ্য হয়ে আবার যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। সহযোদ্ধাদের সাথে ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের পতাকা তুলেছেন, বাহিরদিয়ার মাটিতে। ২০০৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এই বীর যোদ্ধা ইন্তেকাল করেন। গেজেট নাম্বার-২৯০।
বিজয় দিবসের প্রাক্কালে সংবাদকর্মীর কাছে দেয়া প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে যেয়ে বলেন, বাবা জাতির সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ সন্তান। আর আমি গর্বিত, সেই বীরের রক্ত আমার ধমনিতে। আমি গর্ববোধ করি এই বীরের জন্য। আনন্দিত হয়েছি একটি সু-সংবাদে। প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংগঠন মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য খুলনা নগর শাখা বিজয় দিবসের দুপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম তালুকদারকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করবে। আমার ভাই-বোনেরাও এই সঙ্গে আনন্দিত। মুক্তিযোদ্ধার এই পরিবারে আজকের দিনটিও স্মরণীয় যে, দেশমাতৃকার জন্য বাবার ত্যাগকে নাগরিক ঐক্য শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছে। একজন বীর যোদ্ধাকে সম্মানিত করছে। তার ত্যাগ দেশবাসীর সামনে তুলে ধরছে। এতেই আমাদের পরিবার গর্বিত।
খুলনা গেজেট / এমএম