মাদক মামলায় পঞ্চাশোর্ধ নারী সাহিদা বেগম ওরফে রাশিদাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। তবে, আদালত সাত শর্তে রাশিদাকে বাড়িতে বসবাসের আদেশ দিয়েছেন। একইসাথে বাড়িতে বসে তাকে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক সাতটি পূর্নদৈর্ঘ্য চলচিত্র দেখতে হবে। রোববার যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে ভিন্নধর্মী এ রায় দিয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত রাশিদা ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ভাংড়িপট্টির দেলোয়ারের স্ত্রী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলি লতিফা ইয়াসমিন।
বাড়িতে থেকে সাজার শর্তগুলো হলো, সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে কোন প্রকার অপরাধের সাথে জড়িত থাকতে পারবেন না। শান্তি বজায় রেখে সকলের সাথে সদাচারণ করতে হবে। আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে যে কোনো সময় তলব করিলে শাস্তি ভোগের জন্য প্রস্তুত হয়ে নির্ধারিত স্থানে হাজির হতে হবে। কোন প্রকার মাদক সেবন, বহন, সংরক্ষণ এবং সেবনকারী, বহনকারী ও হেফাজতকারীর সাথে মেলামেশা করা যাবে না। একই সাথে আদালত কর্তৃক প্রবেশন অফিসারের তত্বাবধানে থেকে অবস্থা অবহিত করতে হবে। এ প্রবেশন অফিসারের লিখিত অনুমতি ছাড়া নিজের এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না ও ট্রাইব্যুনালের অনুমতি ছাড়া দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না। এছাড়াও বাড়িতে বসে প্রবেশনকালীন মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক পূর্নদৈর্ঘ্য চলচিত্র দেখতে হবে। সেগুলো হলো জয় বাংলা, ওরা ১১ জন, আবার তোরা মানুষ হ, আলোর মিছিল, আগুনের পরশমনি, মাটির ময়না ও গেরিলা।
২০১০ সালের ১৬ আগষ্ট বিকেল চারটায় চৌগাছা উপজেলার চাঁনপুর দেওয়ানী মোড় থেকে রাশিদাকে ১৬ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় চৌগাছা থানার এএসআই আব্দুল খালেক বাদী হয়ে মামলা করেন। এ মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর দীর্ঘ ১১ বছরের মধ্যে আদালতে রাশিদার হাজিরা কামাই ছিল না। এ মামলা ছাড়া তার আর কোন মামলাও নেই। রোববার দীর্ঘ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগে প্রমানিত হয়। আসামির সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পুর্নবাসনের জন্য শর্ত সাপেক্ষে প্রবেশন অফিসারের নিয়ন্ত্রণে প্রবেশনে মুক্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন বিচারক।
খুলনা গেজেট/কেএম