মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০০ তম জন্মবাষির্কী উপলক্ষে কবির জন্মভূমি যশোরের কেশবপুর উপজেলার কপোতাক্ষ তীরের সাগরদাঁড়িতে লাখো মানুষের প্রাণের উৎসব মধুমেলা ২৭ জানুয়ারি শেষ হয়েছে। লাখো মানুষের আগমনে ৯ দিনের মধুমেলায় ছিল উৎসবের আমেজ।
সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্যের আকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। কালজয়ী এ সাহিত্যিকের লেখায় ফুটে উঠেছে বাঙালির স্বজাত্যবোধ ও স্বাধীনচেতা মনোভাব। তার অনন্য সাহিত্যকর্ম বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ মধুসূদন দত্ত বাংলা ভাষায় মহাকাব্য রচনা এবং বাংলা কবিতায় অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রবর্তনের পথিকৃৎ। বিশ্ব সাহিত্যের ভান্ডারে প্রবেশ করে মণি-মুক্তা আহরণ করে তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। নাটক, প্রহসন, মহাকাব্য, পত্রকাব্য, সনেট, ট্রাজেডিসহ সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় তার অমর সৃষ্টি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে উন্নত মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সাগরদাঁড়ির মধুমঞ্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ মেলার সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে জন্মোৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি ও যশোর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাসান মজুমদারের সভাপতিত্বে মধুমঞ্চে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যশোর-৬ কেশবপুর সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য আজিজুল ইসলাম, যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোনেন, উপজেলা চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ।ালহাজ¦ কাজী রফিকুল ইসলাম, যশোর পৌরসভার মেয়র হায়দার গনি পলাশ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ডিসোমিনেশনঅফ নিউ কারিকুলাম, স্কিম এর উপ পরিচালক ড. কুদরত-ই-হুদা ও আবু শারাফ সাদেক কারিগরিক কলেজের প্রভাষক কানাইলাল ভট্টাচার্য।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মধুসূদন জন্মোৎসব উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তুহিন হোসেন।
প্রথম পর্বে সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন পাঁজিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল ব্যানার্জী ও কেশবপুর উপজেলা শিশু বিষয়ক অফিসার বিমল কুমার কুন্ডু।
২য় পর্বে আলোচনা সভা উপস্থাপনায় ছিলেন যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারি কমিশনার সৈয়দা তামান্না হোরায়রা ও যশোর জেলা শিশু বিষয়ক অফিসার সাধন কুমার দাস।
মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামে গত ১৯ জানুয়ারি মেলা শুরু হয়। লাখো মানুষের আগমনে ৯দিন ছিল উৎসবের আমেজ।
মেলায় প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু মেলার মাঠে মধুমঞ্চে মন্ত্রী, এমপি ও দেশ বরেণ্য কবি সাহিত্যিকদের আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ যাত্রা, সার্কাস, মৃত্যুকুপ, যাদু প্রদর্শনী, দেখে এবং ট্রেন, প্লেন ও নাগরদোলায় চড়ে সময় কাটিয়েছেন। এবারের মেলায় প্রতিটি স্টলেই আগত মধুপ্রেমী দর্শনার্থীদের ছিল উপচে পড়া ভিড়।
খুলনা গেজেট/এনএম