গত চারদিনের ব্যবধানে আবারও বাজারে পেঁয়াজের মূল্য ৫ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। চালের দামও বেড়েছে কেজিতে পঞ্চাশ পয়সা থেকে এক টাকা। রসুনের দর পূর্বমূল্যে থাকলেও বেড়েছে আদার দাম। চলছে লকডাউন আর সামনে রয়েছে রমজান, সব মিলিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় বাজার মূল্য বেশ চড়া।
নগরীর কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে জানা গেছে, মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৬ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত চারদিন পূর্বে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
কাঁচা পাকা ফল আড়ত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ রেজাউল হায়দার পাটোয়ারি জানান, গত দু’দিন ধরে পেঁয়াজের বাজারে উত্তাপ লেগেছে। তারা কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহের শৈলকুপা, ফরিদপুর ও কানাইপুরের বিভিন্ন মোকাম থেকে পেঁয়াজ ক্রয় করে বাজারের বিভিন্ন দোকানে সাপ্লাই দিয়ে থাকেন। বর্তমানে এসব মোকামগুলোতে পেঁয়াজের আমদানি কমে গেছে।
তিনি জানান, কাঁচা বাজার সবসময় আমদানির ওপর নির্ভর করে। বাজারে পেঁয়াজের আমদানি খুব কম। সরবরাহ ঠিক হলেই বাজার মূল্য আগের পর্যায়ে চলে আসবে। খুলনায় প্রতিদিন যেখানে ৫ ট্রাক পেঁয়াজের প্রয়োজন হয়, সেখানে ২ ট্রাক করে মাল আসছে। আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে পেঁয়াজের বাজার মূল্য আবারো জনগণের হাতের নাগালে চলে আসবে।
খুচরা বাজারে মানভেদে মিনিকেট চাল প্রতি কেজি সাড়ে ৫৭ টাকা থেকে ৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে ভারতীয় মিনিকেট ভালো মানের ৫৩ টাকা, দেশী ২৮ বালাম ৪৯ টাকা, ভারতীয় ২৮ চাল ৪৬ টাকা, বালাম লোকাল ৫৪ টাকা, স্বর্ণা ৪৩ টাকা, বালাম লোকাল ৫৪ টাকা, বাসমতি ৬৮ টাকা ও নাজিরশাল চাল ৬৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত কয়েকদিন চালের বাজার একটু কম থাকলেও আজ থেকে প্রতি কেজি চালের দাম পঞ্চাশ পয়সা থেকে এক টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভোমরা বন্দরের স্থলপথ গত কয়েকদিন চালের আমদানি বন্ধ রয়েছে আর যার কারণে চালের এ মূল্য বেড়েছে বলে বড় বাজারের কুন্ডু ট্রেডার্সের মালিক জানিয়েছেন। আগামি ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে বাজার দর ঠিক হয়ে যাবে।
চাল ব্যবসায়ী শংকর কুন্ডু জানান, বাজার এখন ভারতীয় চালের দখলে। বাজারে দেশী চাল নেই বললেই চলে। তারা যেখানে প্রতিদিন চারশত বস্তা চাল বিক্রি করতেন, এখন সেখানে ৫০ বস্তা চাল বিক্রি করা দায় হয়ে পড়েছে। সারাদিন চার থেকে পাঁচ জন কাষ্টমার আসেন চাল ক্রয় করতে। বাকি সময় বসে কাটিয়ে দিতে হয়।
নগরীর টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের ব্যবসায়ী জানান, চালের দাম খুব তাড়াতাড়ি পতন হবে। কারণ সামনে বৈশাখ মাস। নতুন ধানের সমাগম হলে বাজারে চালের দাম কমে যাবে।
তেলের বাজারে কোন সুখবর নেই। কিছুতেই যেন উত্তাপ কমছে না। কোম্পানী ভেদে পাঁচ লিটারের প্রতিটি বোতল ৬৩০ থেকে ৬৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। তবে দু থেকে তিন দিনের মধ্যে তেলের দাম আবারো বাড়তে পারে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
অপরদিকে বাজারে দেশী আদার চরম সংকট দেখা দিয়েছে। দেশী আদা একেবারে নেই বললেই চলে। যা পাওয়া যায় তাও ভারতীয়। ব্যবসায়ীরা ভারতীয় আদা দেশি বলে বিক্রি করছেন। আদার দাম মান ভেদে ১০ থেকে ২০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে খুচরা বাজারে আদা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কি কারণে আদার দাম বেড়েছে তার সঠিক উত্তর বাজারের ব্যবসায়ীরা জানাতে পারে নি।
খুচরা বাজারে মশুর ডালের দাম কিছুটা কমেছে। বর্তমানে মশুর ডাল মান ভেদে প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি