কক্সবাজারে সমুদ্রস্নানে গিয়ে যশোরে ফেরা হলো না দুই বন্ধুর। সাত বন্ধুর সাথে আনন্দ ভ্রমন হয়ে গেল শোকগাঁথা এক হৃদয় বিদারক কাহিনী।
সমুদ্রের পানিতে ডুবে মৃত দু’ছাত্র হচ্ছেন, যশোর উপশহরের মোটরপার্টস ব্যবসায়ী কাসেদুজ্জামান সেলিমের ছেলে রাফিদ ঐশিক (২৫) ও যশোর লালদীঘি পাড়ের ডা. আব্দুর রাজ্জাক কলেজের প্রভাষক শাহরিয়ার মেহেরের ছেলে মেহের ফারারী অভ্র (২৫)।
এদের মধ্যে ঐশিক যশোর ক্যান্টমেন্ট কলেজ এবং অভ্র ঢাকার একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলো। মৃত্যু সংবাদ পরিবারের কাছে পৌঁছানোর পরই শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েন বাবা মা ও তাদের স্বজনেরা। বাড়ির সামনে ভিড় জমাচ্ছে বন্ধুরা।
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, ঐশিক ও অভ্র তার অপর ৫ বন্ধুর সাথে ১৫ সেপ্টেম্বর বার্ষিক ভ্রমনের অংশ হিসেবে কক্সবাজারে যায়। ১৬ সেপ্টেম্বর তারা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে সাঁতার কাটতে নামে। এসময় সমুদ্র ছিল উত্তাল। আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ঐশিক, অভ্রসহ ৭ বন্ধুই নেমে পড়ে সমুদ্রস্নানে। এক পর্যায়ে পানির তোড়ে বন্ধুরা একে অপরকে হারিয়ে ফেলে। কোনো রকমে ৫ বন্ধু সৈকতে ফিরতে পারলেও নিখোঁজ ছিল ঐশিক ও অভ্র।
গত দু’দিন তাদের কোন নিখোঁজ পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ সংবাদ শুনে ওই দুই পরিবারের শ্বাসরুদ্ধকর সময় কাটছিল। এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর উদ্ধার হয় তাদের লাশ। সৈকতের সি-গাল ও নাজিরারটেক পয়েন্টে তাদের মরদেহ ভেসে আসে।
সেখান থেকেই তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কক্সবাজার হাসপাতালে তাদের ময়না তদন্ত শেষে এদিন সন্ধ্যায় পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে, যশোরে লাশ না পৌঁছালেও বন্ধুরা জড়ো হতে থাকে তাদের উপশহর ও লালদিঘীপাড়ার বাড়ির সামনে। বাড়িতে চলছে পিতা-মাতা আত্মীয় স্বজনের কান্নায় রোল। তারা বিশ্বাসই করতে পারছেন না ছেলে আর নেই। কক্সবাজারে বন্ধুদের সাথে আনন্দভ্রমণ করতে গিয়ে লাশ হয়ে এখন তারা বাড়ি ফিরছে।
রাফিদ ঐশিকের বাবা কাসেদুজ্জামান সেলিম জানান, এটা ঘটনা হত্যাকান্ড। ছেলের মৃত্যুর পেছনে কোনো রহস্য রয়েছে এবং তিনি তা উদঘাটনের জোর দাবি জানান।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মুনীর-উল-গিয়াস বলেন, ‘ঐশিক ও অভ্রর ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। যেহেতু এটা একটা বড় ঘটনা, সেহেতু এর পেছনে অন্য কোনো রহস্য আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গোটা ঘটনা সম্পর্কে জানতে শনিবার বিকেলে সমুদ্র সৈকত থেকে নিহতদের চার বন্ধু রায়হান, রোহান, মহিদুল হাসান ও অর্নবকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে । তাদেরকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
খুলনা গেজেট/ এস আই