সস্ত্রাসী হামলায় নিহত দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি ও প্রাক্তন উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী জাকির হোসেনের নামাজে জানাযা সম্পন্ন হয়েছে।
আজ বুধবার (৩ আগষ্ট) সকাল সাড়ে ১০ টায় বারাকপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টায় তাঁর মৃতদেহ ঢাকা থেকে ময়না তদন্ত শেষে বারাকপুর বাজার সংলগ্ন নিজ বাড়িতে পৌঁছালে তাঁর স্বজন, এবং এলাকাবাসী কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। এ সময় এক হদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণ হয়।
জানাজায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী, উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ মারুফুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর ইসলাম বন্দ, জেলা আ’লীগ নেতা মোঃ কামরুজ্জামান জামাল, শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু, এম রিয়াজ কচি, অসিত বরণ বিশ্বাস, এসএম খালেদীন রশীদি সুকর্ণ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ আলম হাওলাদার, উপজেলা আ’লীগের সভাপতি খান নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোল্লা আকরাম হোসেন, উপজেলার সকল ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, দিঘলিয়া সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হায়দার আলী মোড়ল, গাজীরহাট ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা মফিজুল ইসলাম ঠান্ডু, সেনহাটী ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জিয়াউর রহমান, যোগীপোল ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সাজ্জাদুর রহমান লিংকন, গিলাতলা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মনিরুল ইসলামসহ দলমত নির্বিশেষ এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষ জানাজায় অংশ নেয়।
জানাজার পূর্বে বারাকপুর ইউনিয়ন পরিষদের অভ্যন্তরে তাঁর মৃতদেহ কিছু সময় রাখা হয়। এখানে পরিষদের পক্ষ থেকে তার মৃতদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এ ছাড়া তার মৃতদেহ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী, উপজেলা আওয়ামী লীগ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ।
গাজী জাকির হোসেন ছিলেন বিগত ইউপি নির্বাচনে দিঘলিয়া উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের মধ্যে একমাত্র নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী ইউপি চেয়ারম্যান। এর আগেও তিনি ২ বার একই ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।
দীর্ঘ ৫০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ২ আগষ্ট দিবাগত রাত ১ টায় রাজধানী ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে বেশ কিছুদিন যাবৎ তিনি আইসিইউতে ছিলেন। সোমবার ১ আগষ্ট ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে সেই থেকে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী এক কন্যা, ৪ পুত্রসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন এবং গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
১২ জুন সন্ধ্যা অনুমানিক সাড়ে ৭ টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেন মোটরসাইকেল যোগে আড়ুয়া থেকে বারাকপুর ফেরার পথে বোয়ালিয়ারচরে পৌঁছালে ৮/১০ সন্ত্রাসী তার গতিরোধ করে। এ সময় তারা গাজী জাকির হোসেনকে লোহার রড জিআই পাইপ দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে তাঁকে পার্শ্ববর্তী খালে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়।
গাজী জাকির হোসেনের উপর হামলাকারী রা সবাই হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় কিছুদিন অবস্থানের পর বর্তমানে সবাই পলাতক রয়েছে বলে জানা যায়। হামলাকারী সবাই একই ইউনিয়নের লাখোয়াটী গ্রামের অধিবাসী।
গাজী জাকির হোসেনের নামাজে জানাজার পূর্বে বক্তৃতাকালো খুলনা জেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুজ্জামান জামাল বারাকপুর ইউপি’র জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ও আ’লীগনেতা গাজী জাকির হোসেনের হত্যাকারীদের কোন রকম ছাড় না দেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।