ঢাকায় যাওয়ার জন্য দু’ভাই বাড়ি থেকে এক সাথে বের হয়। এরমধ্যে ছোট ভাই বিংসাম গোপালগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে নেমে ট্রেনে করে রাজবাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে জানতে পারেন ইমাদ পরিবহনের ২০৩ নং নম্বর কোচটি মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। সেখানে দুর্ঘটনায় নিহতেদের তালিকায় তার ভাইয়ের নাম রয়েছে। ভাইয়ের লাশ নিয়ে তিনি খুলনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন।
ইশরাকুজ্জামান বিংসাম রাজবাড়িতে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত । সপ্তাহের শেষ দিনে খুলনা মহানগরীর টুটপাড়া আমতলা বাড়িতে চলে আসেন। তিনি বলেন, ভাই আশফাকুজ্জামান লিংকন পেশায় প্রথম শ্রেণির একজন ঠিকাদার। ঢাকা ও খুলনায় তার কাজ চলছে। বিংসাম কর্মস্থল রাজবাড়ি ও ভাই ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য খুব ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়।
তিনি বলেন, ইমাদ পরিবহনের ২০৩ নম্বর কোচের একটা সিটের পর তিনি ও পরের আসনে লিংকন বসেছিল। শুরুর থেকে গাড়িটির গতিবেগ বেশীই ছিল। প্রথমদিকে চালককে দ্রুত চালানোর জন্য নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা চালক কর্ণপাত করেননি। ভোর ৬ টার দিকে গাড়িটি গোপালগঞ্জে পৌছায়। সেখান নামার পূর্বে ‘আমার ভাই ভাল থাকিস’ বলেন। এরপর থেকে তার সাথে আর কোন যোগাযোগ হয়নি।
বিংসাম আরও বলেন, লিংকন খুলনার প্রথম শ্রেণির একজন ঠিকাদার। খুলনায় ও ঢাকায় তার কাজ চলছে। ঢাকার কাজ দেখার জন্য তিনি আমার সাথে ইমাদ পরিবহনে রওনা হন। ভাইয়ের মৃত্যুতে তিনি ভেঙ্গে পড়েছেন।
তিনি আরও বলেন, দু’ভাই একসাথে যাত্রা করলাম। এখন ভাইয়ের মরদেহ নিয়ে বাড়িতে ফিরছি। বাবা মাকে সান্তনা দেওয়ার ভাষা নেই তার। দুপুরে ভাইয়ের মরদেহ নিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে মাদারীপুর থেকে যাত্রা করেছেন। রাতে এশার নামাজের পর পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ি স্থানীয় কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। লিংকন টুটপাড়া আমতলা মসজিদ এলাকার শাহাজাহান মোল্লার ছেলে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/ এসজেড