সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের ওপর পাহাড়সম বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসে ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিসের সেঞ্চুরিতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪১৯ রানে অলআউট হয়ে বাংলাদেশকে লক্ষ্য দিয়েছে ৫১১ রানের। এদিকে পাহাড় সমান এই রানের টার্গেট চ্যালেঞ্জে নেমে শুরুতেই দুই উইকেট খুইয়েছে বাংলাদেশ। জয় ও শান্তকে হারিয়ে বিপর্যয়ের মুখে টাইগাররা।
জিততে হলে বাংলাদেশকে বিশ্বরেকর্ডই গড়তে হবে। টেস্টে সবচেয়ে বেশি রান (৪১৮) তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪১৩ রান করার নজির আছে বাংলাদেশের। সেটা ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই। কিন্তু জিততে পারেনি। কেননা লক্ষ্যটা ছিল ৫২১ রানের। ১৫ বছর পর আবারও একই দৃশপটে দাঁড়িয়ে টাইগাররা।
তৃতীয় দিনে ৫ উইকেট হাতে ২১১ রানের লিড নিয়ে মাঠে নামে শ্রীলঙ্কা। আগের দিন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে ব্যাটিংয়ে নামা বিশ্ব ফার্নান্দো তৃতীয় দিনে দ্রুতই ফেরেন। তাকে মিরাজের হাতে ক্যাচ বানিয়ে খালেদ আহমেদ পেয়ে যান নিজের প্রথম উইকেটের দেখা। তখনও শ্রীলঙ্কার রান কেবল ১২৬।
এরপর অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভার সঙ্গী হন সেই কামিন্দু মেন্ডিস। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয়টিতেও ভুগিয়েছে তাদের জুটি। দুজন ব্যক্তিগত সেঞ্চুরির সঙ্গে ২০২ রানের জুটিতে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসেও তাদের জুটি ছিল ১৭৩ রানের।
প্রথম সেশনের শেষদিকে এসে কিছুটা আক্রমণাত্মকও হয়ে ওঠেন দুই ব্যাটার। এর মধ্যে ধনঞ্জয়া পেয়ে যান সেঞ্চুরির দেখা, ১৮৪ বলে ব্যক্তিগত সংগ্রহ তিন অঙ্কে নিয়ে যান তিনি। তাকে ফিরিয়েই বড় জুটিটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
তার বলে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে দেন তিনি। আরও একটি দুর্দান্ত ইনিংসের ইতি ঘটে তাতে। দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করা ধনঞ্জয়া ৯ চার ও ২ ছক্কায় ১৭৯ বলে ১০৮ রান করে আউট হন। তার বিদায়ের পর অপেক্ষা ছিল কামিন্দুর সেঞ্চুরির জন্য।
চা বিরতিতে যাওয়ার আগেই সেটি পেয়ে গেছেন তিনি। আগের ইনিংসেও সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটার আউট হন ২৩৭ বলে ১৬ চার ও ৬ ছক্কায় ১৬৪ রান করে। সাত বা তার নিচে নেমে এই প্রথম কোনো ব্যাটার এক টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরির নজির গড়লেন।
এক টেস্টে একই দলের দুই ব্যাটারের জোড়া সেঞ্চুরির ঘটনা ক্রিকেট ইতিহাসে এই নিয়ে তৃতীয়বার ঘটল। ১৯৭৪ সালে প্রথম এই কীর্তি গড়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ভাই গ্রেগ চ্যাপেল ও ইয়ান চ্যাপেল। এর ৪০ বছর পর সেই স্মৃতি ফেরান পাকিস্তানের আজহার আলী ও মিসবাহ উল হক।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এছাড়া দুটি করে শিকার নাহিদ রানা ও তাইজুল ইসলামের।
খুলনা গেজেট/এমএম