যশোরের চৌগাছায় ও বাঘারপাড়া উপজেলা পৌর এলাকা সাতদিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা সংক্রমণ ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাওয়ায় এ ঘোষণা দিয়েছে দুটি উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) চৌগাছায় ও বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, পৌর এলাকায় সাতদিনের বিধিনিষেধ চলাকালে উপজেলার অভ্যন্তরীণ সকল রুটে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে। কাঁচা বাজার ফুল ও ফলের দোকান সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে রোগী পরিবহণকারী অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি পণ্য বহনকারী ট্রাক ও জরুরী সেবাদানের ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না।
সকল প্রকার মহাসড়কে আন্তঃজেলা গণপরিবহন সরকার কর্তৃক আরোপিত চলমান স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে পারবে। কাঁচাবাজার উন্মুক্ত নির্ধারিত স্থানে বসাতে হবে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ সাপেক্ষে সকাল থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। যে সকল ওষুধের দোকানের বৈধ লাইসেন্স আছে সে সকল দোকান ২৪ ঘন্টা খোলা রাখা যাবে। এছাড়া সকল শপিং মল, বিপনী বিতান, চায়ের দোকান বন্ধ থাকবে। খাবার হোটেল খোলা থাকলেও বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না। সবাইকে ঘরে থাকতে হবে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবে না। অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে।
গত মে মাসে উপজেলায় ১৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলো। চলতি মাসে ১২২ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৬ জনের পজিটিভ হয় ও ৩ জন মারা গেছেন। করোনা সংক্রমণের হার শতকরা ৪৬ ভাগ।
এদিকে, বাঘারপাড়া উপজেলায় করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় উপজেলার কয়েকটি এলাকায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আাগামী ১৯ জুন শনিবার থেকে ২৫ জুন শুক্রবার পর্যন্ত এ বিধিনিষেধ বহাল থাকবে। বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদ মিলানায়তনে করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আফরোজ বলেন, বাঘারপাড়া পৌর এলাকা, বন্দবিলা ইউনিয়ন, খাজুরা বাজার ও নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নসহ বাজারে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এসব এলাকায় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শুধুমাত্র কাঁচাবাজার ও মুদি দোকান খোলা থাকবে। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই ক্রেতা-বিক্রেতার মুখে মাস্ক থাকবে। বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে থাকবে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া পুলিশের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ ও বাজার কমিটি বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে কাজ করবে।
বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শরিফুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত উপজেলায় ৬২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। এরমধ্যে হাসপাতালের আইসোলেশানে ৩ জন এবং বাকিরা বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। মারা গেছেন ৫ জন। তিনি বলেন, হাসপাতালের মেডিকেল টেকনিশান (এমটি) করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তিনদিন ধরে নমুনা সংগ্রহ বন্ধ রয়েছে। যশোর সিভিল সার্জন অফিসে এ বিষয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই