বুধবার যশোরের আকাশে সূর্যের দেখা মেলেনি। মধ্যরাত থেকেই আকাশে মেঘের ঘনঘটা শুরু হয়। ভোরে মেঘ ভেদ করে আলো ছড়াতে পারেনি সূর্য। সকাল থেকেই দিনভর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়েছে। বেলা বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃষ্টি ঝরা বাড়তে থাকে। মেঘের গর্জন তেমন শোনা যায়নি, বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হননি অনেকে। শহরে যানবাহন চলাচল ছিল কম। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস, ব্যাংক বীমা ও আদালতপাড়ায় অন্য দিনের মতো লোকসমাগম ছিল কম। ধান ক্ষেতে হাঁটুজল বেঁধে যায়। শহরের অলি-গলি ও পাড়া-মহল্লার সড়কে বৃষ্টির পানি জমে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবারের বৃষ্টিতে কৃষকের সোনালী স্বপ্নে মই পড়েছে। অনেকে ধান কাটতে পারলেও ঘরে তুলতে পারেননি। ক্ষেতেই ছিল কাটা ধান, এদিনের বৃষ্টির পানিতে এ ধান ভেসে উঠেছে। কেউ আবার শ্রমিক না পেয়ে পাকা ধান কাটতে পারেননি। ধান বাঁচাতে গেরস্ত পরিবারের মেয়ে-ছেলে নিয়ে ধান কাটতে নেমে পড়েছেন মাঠে। কিন্তু শেষ রক্ষা পাননি অধিকাংশ কৃষক।
যশোর বিমান বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন আবহাওয়া অফিস সূত্র জানিয়েছে, এদিন বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত যশোরে ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। দিনের তাপমাত্রা ছিল ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯১ শতাংশ। রাতেও আকাশ মেঘলা থাকতে পারে, কিন্তু ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
এদিকে, দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির ধারা রুপ নেয় মুসলধারে। শহরের অলি গলি মাঠ ঘাট সব বৃষ্টির পানি জমে একাকার হয়ে যায়। বৃষ্টির ফলে কার্যত জনজীবন থমকে যায়। বিশেষ করে অফিস আদালতে আগত ব্যক্তি ও বিভিন্ন পণ্যবাহী ভ্যানচালকরা ব্যাপক দুর্ভোগ পোহান।
তবে বিকাল ৫টার দিকে বৃষ্টি কমে যায়। বৃষ্টির মধ্যে কৃষককে তাদের ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়েছে। আর যারা কেটে রেখেছিল তারা বাঁধতে পারেনি। ঝড় না হওয়ায় তেমন সমস্যা হয়নি। যশোর শহরের বাইরে চুড়ামনকাটিতে বৃষ্টি হয়েছে বেশি। বাঘারপাড়া, মণিরামপুর, ঝিকরগাছা ও শার্শায় বৃষ্টি তেমন হয়নি। আগের দিন সেখানে বৃষ্টি হয়েছিল।
এদিকে, আগেই ঝড় ও বজ্রবৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আগামী ১৩ থেকে ১৪ মে বাংলাদেশে আঘাত আনতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মোচা। ঝড়ের গতি ভয়াবহ রুপ নিতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড