সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি ও তাকে হেনস্তা করার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে যশোরে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বুধবার (১৯ মে) কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
যশোরে সাংবাদিকদের সাতটি সংগঠনের যৌথ আয়োজনে এসব কর্মসূচি পালিত হয়। এদিন বেলা ১১টায় প্রেসক্লাব যশোরের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে শহরের প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। শেষে কালেক্টরেট চত্বরে গিয়ে সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুনের সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তৃতা করেন যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি একরাম-উদ-দ্দৌলা, প্রেসক্লাবের সম্পাদক আহসান কবির, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান, যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শেখ দিনু আহমেদ, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন যশোরের সভাপতি মনিরুজ্জামান মুনির ও টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের জিয়াউল হক জিয়া ও প্রথম আলোর যশোর প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম। সমাবেশ সঞ্চলনায় ছিলেন প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সরোয়ার হোসেন, দপ্তর সম্পাদক তৌহিদজ্জামান এবং সাংস্কৃতিক ও সমাজসেবা সম্পাদক তহীদ মনি।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনাকে নির্যাতনের সাথে জড়িত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে সাংবাদিক সমাজ। স্বাস্থ্য বিভাগের দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট করায় পরিকল্পিতভাবে ডেকে নিয়ে রোজিনাকে এ হয়রাণি করা হয়েছে। গণমাধ্যম কর্মীর সাথে এ আচরণ গোটা সাংবাদিক সমাজকে নিগৃহীত করার শামিল। দলমত নির্বিশেষে পেশাগত নৈতিক দায়িত্বের প্রশ্নে সাংবাদিকরা আজ একসাথে রাজপথে উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ পেশাগত দায়িত্বপালনে সব সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। এ দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুশিয়ারি দেন নেতৃবৃন্দ।
এদিকে সাংবাদিকদের এ কর্মসূচিতে একাত্মতা ঘোষণা করে উপস্থিত হন যশোরের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টি (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হারুন অর রশীদ প্রমুখ।
একাত্মতা প্রকাশকারীরা অভিমতে জানান, গোপনভাবে তথ্য সংগ্রহ করা সাংবাদিকতার অধিকার। এটা ছাড়া তো সাংবাদিকতা চলে না। রোজিনাকে হেনস্তা করা ও মামলায় আটক করা স্বাধীন ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং মুক্ত গণমাধ্যমের প্রতি ধারাবাহিক আক্রোশের প্রতিফলন বলেও তারা মনে করেন।
খুলনা গেজেট/কেএম