যশোরে পৃথক দুটি মামলায় তিন আসামির কারাদণ্ড প্রদান করেছেন পৃথক দুটি আদালত। রায়ে আদালত দু’জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ও অপর একজনকে বাড়িতে বসে কারাভোগের আদেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, যশোরে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত যুবক মিন্টু মিয়াকে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র, বই পড়া, বনজ-ফলজ গাছ লাগানোসহ শর্তসাপেক্ষে বাড়িতে সাজাভোগের জন্য দু’বছরের প্রবেশনে মুক্তি দিয়েছেন আদালত। শর্ত অমান্য করলে দু’বছর সশ্রম কারাদন্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের সশ্রম কারাভোগের জন্য কারাগারে আটক থাকতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। বুধবার যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ (২য়) আদালতে বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাস এক রায়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে এ সাজার আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত মিন্টু মিয়া শহরের রায়পাড়া কলয়াপট্টির গোলাম নবীর বাড়ির ভাড়াটিয়া আব্দুল করিম মিয়ার ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পিপি ভীম সেন দাস।
রায়ের শর্তগুলো হচ্ছে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে কোনো ধরনের অপরাধ করা যাবে না। আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে যে কোনো সময় তলব করলে শাস্তি ভোগের জন্য প্রস্তুত হয়ে নির্ধারিত স্থানে হাজির হতে হবে। প্রবেশন অফিসারের লিখিত অনুমতি ছাড়া নিজের এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না। এবং ট্রাইব্যুনালের অনুমতি ছাড়া দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না।
প্রবেশনে সাজা ভোগের সময় বাড়িতে বসে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক পূর্ণদৈর্ঘ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দেখতে হবে। সিনেমাগুলো হচ্ছে, রক্তাক্ত বাংলা, অরুণ্যোদয়ের অগ্নি সাক্ষী, শ্যামল ছায়া ও হুলিয়া। বই পড়তে হবে মহাপুরুষ, ইতিহাসের রক্ত পলাশ, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও মা। ২০০৯ সালের ৯ ডিসেম্বর পুলিশ মিন্টু মিয়াকে একটি বোতলে আটশ’ গ্রাম ফেনসিডিলসহ আটক করে।
অপরদিকে, যশোরে সোনা চোরাচালান মামলায় দু’যুবককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দিয়েছেন অপর একটি আদালত। বুধবার অতিরিক্ত দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক এমএ হামিদ এক রায়ে এ সাজা দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্তরা হচ্ছে, বেনাপোলের বড়আঁচড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে ইকবাল হাসান ও আজিজুর রহমানের ছেলে ওমর ফারুক রনি। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি-১ আবু সেলিম রানা।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বড়আঁচড়া ভাঙ্গার মুখ হয়ে বিজিবির ৪৯/ই কোম্পানির একদল সদস্য সাড়ে আটটার দিকে তাদের আটক করে। পরে দেহ তল্লাশি করে কোমরে কসটেপ দিয়ে আটকানো ১৫টি করে ৩০টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন তিন কেজি চারশ’ ৯৫ গ্রাম। দাম দু’ কোটি ১৬ লাখ ৯০ হাজার ছয়শ’ টাকা। এ ব্যাপারে বিজিবির নায়েক নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে চোরাচালান দমন আইনে দু’জনকে আসামি করে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা করেন। মামলার দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামি ইকবাল হাসান ও ওমর ফারুক রনির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাদের ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত দু’জন কারাগারে আটক রয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেএম