যশোর জেনারেল হাসপাতালের রেডজোনে গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় আক্রান্ত এক নারীসহ দু’জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এসময় ভারত ফেরত নারীসহ তিনজন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালের রেডজোনে মোট ৫০ জন করোনা রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে ভারত ফেরত ১৫ রোগী রয়েছে।
এদিন করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসায় হাসপাতাল থেকে পালাতক এক নারীকে ছাড়পত্র দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে পুলিশ তাকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। আদালত তাকে জামিন দেয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আরিফ আহম্মেদ।
যশোর সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার রেহনেওয়াজ রনি জানান, বৃহস্পতিবার যশোরে ২১ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদিন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় জিনোম সেন্টারে ৩৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এরমধ্যে দুই জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যমেক হাসপাতালে র্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষায় ৫৩ জনের নমুনায় ১৯ জন পজিটিভ হয়েছে। এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ ল্যাবে দু’জনের নমুনা পরীক্ষায় সবগুলো নেগেটিভ ফলাফল এসেছে।
হাসপাতালের সূত্রে জানা গেছে, রেডজোনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যশোর সদর উপজেলার মোমিননগর নওদা গ্রামের সাহেব আলীর স্ত্রী বিউটি বেগমের (৩৫) মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে তার শারীরিক আবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার নাফিসা আক্তার ওয়ার্ডে এসে বিউটি বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি গত ২৩ মে শ্বাসকষ্ট, জ্বরসহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালের ইয়েলোজোনে ভর্তি হন। পরে ২৪ মে তার নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ হলে তাকে রেডজোনে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান।
এদিকে, বুধবার রাতে হাসপাতালের ইয়েলোজোনে করোনা উপসর্গ নিয়ে লুৎফর রহমান (৭০) নামে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। তিনি বাঘারপাড়া উপজেলার বুধপুর গ্রামের আব্দুর রহিম মোল্লার ছেলে।
মৃতের স্বজন আলমগীর হোসেন জানান, লুৎফর রহমান গত ১০/১২ দিন যাবৎ বাড়িতে জ্বরসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। গত ২৫ মে সকাল সাড়ে নয়টায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে স্বাজনরা তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনে। তার করোনার উপসর্গ থাকায় তাকে ইয়েলোজোনে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার গভীররাতে তার মৃত্যু হয়।
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার হাসপাতালের রেডজোনে নতুন করে তিনজন করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। তারা হলেন, ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালি গ্রামের জব্বার আলীর স্ত্রী মলি আক্তার (৫৫), একই উপজেলার মাটিকুমড়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে শাহানুর কামাল (৪০) ও ভারতফেরত পাবনার ইশ্বরদি গ্রামের আক্রাম হোসেনের স্ত্রী মৌসুমি আক্তার (৩৫)।
এদিন হাসপাতাল থেকে সাতক্ষীরা সোনাতলী গ্রামের মমতাজ আলীর স্ত্রী সেফালি বেগমকে ছাড় পত্র দেয়া হয়েছে। তবে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার অপরাধে ছাড়পত্র পাওয়ার পরে পুলিশ তাকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেন। পরে তিনি আদালত থেকে জামিন নিয়ে বাড়িতে ফিরে যান।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আরিফ আহম্মেদ জানান, বৃহস্পতিবার বিভিন্ন সময় উল্লেখিতরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্ত নতুন রোগী মৌসুমি শার্শার একটি হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। ২৭ মে তার নমুনা পজিটিভ হলে তাকে বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া রেডজোনে করোনা আক্রান্ত বিউটি বেগম ও ইয়েলোজোনে লুৎফর রহমানের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি