করোনা সংক্রমণের হার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় যশোর ও নওয়াপাড়া পৌর এলাকা লকডাউন (কঠোর বিধিনিষেধ) ঘোষণা করা হয়েছে। একইসাথে যশোর পৌর এলাকার নয়টি ওয়ার্ডে মানুষের চলাচল সীমিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুন) বেলা তিনটায় যশোর জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান। সভায় উপস্থিত ছিলেন যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার, সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, যশোরের পৌর মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুনসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
সভায় বলা হয়, যশোর জেলায় মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে করোনা শনাক্তের হার বাড়তে শুরু করে। জুন মাসের শুরু থেকে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গত ৩ জুন শনাক্তের হার ছিল ২৫ শতাংশ। ৪ জুন কমে দাঁড়ায় ২৩ শতাংশ। ৫ জুন ছিল ২০ শতাংশ। ৬ জুন সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ২৩ শতাংশে। ৭ জুন তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ২৯ শতাংশে। ৮ জুন এ হার আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশে। এ পর্যন্ত জেলায় সাত হাজার ৯৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে মারা গেছেন ৮৩ জন। এছাড়া যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫৭ জন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান বলেন, সভায় যশোরের সার্বিক করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে। প্রতিদিন যশোর পৌর এলাকা ও অভয়নগরের নওয়াপাড়া পৌর এলাকায় সংক্রমণের হার বেড়ে যাচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে যশোর পৌর এলাকার দুটি ওয়ার্ডের চলমান বিধিনিষেধ নয়টি ওয়ার্ডে সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এছাড়া নওয়াপাড়া পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডের চলমান বিধিনিষেধও সকল ওয়ার্ডে সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে বলে তিনি জানান। বুধবার রাত থেকেই এ লকডাউন কার্যকর করা হবে বলে করোনা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, সভায় সবাইকে মাস্ক ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বাজারে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের উপর জোর দেয়া হয়। এছাড়াও গণসমাবেশ ও অনুষ্ঠান কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ, মোটরসাইকেলে একজন, রিকশায় একজন এবং অটোরিকশায় দু’জনের বেশি চলাচল করতে পারবে না বলেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে গণপরিবহন ও দোকানপাট শপিংমলের বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, গত ৫ জুন রাতে করোনা কমিটির সভায় যশোর পৌরসভার ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ও নওয়াপড়া পৌরসভার দুটি ওয়ার্ডে সরকারি বিধিনিষেধ কঠোরভাবে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি। এ দুটি ওয়ার্ডের কয়েকটি সড়কে ওইদিন রাত থেকেই বাঁশ বেধে মানষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি