খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিচার বিভাগকে ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে : ড. ইউনূস
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা

যবিপ্রবির ৫ কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুদকে সনদ জালিয়াতির মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বরখাস্ত পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতির অভিযোগে মামলা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে আজ শনিবার মামলাটি করেন দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব নিয়োগী। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আল-আমিন।

মামলার আসামিরা হলেন, বরখাস্তকৃত সেকশন অফিসার (গ্রেড-২) যশোর সদর উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের বাসিন্দা হাসনা হেনা, সেকশন অফিসার (গ্রেড-২) চৌগাছা উপজেলার মুক্তারপুর গ্রামের সাকিব ইসলাম, টেকনিক্যাল অফিসার শ্যামনগর গ্রামের জাহিদ হাসান, সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) চৌগাছা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম ও অফিস সহকারী সদরের বিরামপুর গ্রামের সুমন হোসেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্ত আসামিরা প্রতারণার মাধ্যমে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জাল করে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি গ্রহণ করেন। যা দণ্ডবিধি ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আল-আমিন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর যবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আহসান হাবীব বাদী হয়ে আসামি হাসনা হেনা, সাকিব ইসলাম, জাহিদ হাসান, জাহাঙ্গীর আলম ও সুমন হোসেনের বিরুদ্ধে জাল সনদ ব্যবহার করে চাকরি গ্রহণ করার অপরাধে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় এজাহার দায়ের করেন।

এজাহারে বর্ণিত আসামিরা সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারী হওয়ায় এটি দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ বিধায় থানা পুলিশ জিডি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদক যশোরে প্রেরণ করে।

মামলার তথ্য অনুযায়ী, আসামি হাসনা হেনা যবিপ্রবিতে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পেয়ে পরবর্তীতে সেকশন অফিসার (গ্রেড-২) পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। চাকরি করা অবস্থায় হাসনা হেনার দাখিলকৃত বিএ (অনার্স) পাসের সাময়িক সনদ যাচাই বাছাইকালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তা জাল বলে মতামত প্রদান করে।

একইভাবে আসামি সাকিব ইসলাম অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে যোগ দিয়ে পরবর্তীতে সেকশন অফিসার (গ্রেড-২) পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। কিন্তু তার চাকরির আবেদনের সঙ্গে দাখিলকৃত বি.কম (অনার্স) পাসের সাময়িক সনদ ও নম্বরপত্র জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় জাল বলে মতামত দেয়।

আসামি জাহিদ হাসান ডেমোনেস্ট্রটর পদে নিয়োগ পেয়ে পরবর্তীতে টেকনিক্যাল অফিসার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। তার চাকরির আবেদনপত্রের সঙ্গে দাখিলকৃত বিএসসি (অনার্স) পাসের সাময়িক সনদ ও নম্বরপত্রও জাল বলে মতামত প্রদান করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

আসামি জাহাঙ্গীর আলম অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পেয়ে পরবর্তীতে সেকশন অফিসার (গ্রেড-১) পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। তার চাকরির আবেদনপত্রের সঙ্গে দাখিলকৃত বিএসসি (অনার্স) পাসের সাময়িক সনদ ও নম্বরপত্রও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় জাল বলে মতামত দেয়।

আসামি সুমন হোসেন এম.এল.এস.এস পদে নিয়োগ পেয়ে পরবর্তীতে অফিস সহকারী (আপগ্রেডেড) পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। তার চাকরির আবেদনপত্রের সঙ্গে দাখিলকৃত এসএসসি পরীক্ষা পাসের সনদ সঠিক নয় বলে মতামত দেয় যশোর শিক্ষাবোর্ড। জাল সনদে চাকরি নেওয়ায় ইতিমধ্যে এই পাঁচ কর্মকর্তা কর্মচারীকে বরখাস্ত করেছে যবিপ্রবি।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা প্রতারণার মাধ্যমে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জাল করে তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর দাখিলপূর্বক চাকরি গ্রহণ করে সরকারি অর্থ বেতন-ভাতাদি হিসেবে উত্তোলনকরত: আর্থিক ক্ষতিসাধন করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

মামলা দায়েরের পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক চিরঞ্জীব তদন্ত করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক আল-আমিন বলেন, যবিপ্রবির বরখাস্ত পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতির অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে বিচার শুরু হবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!