যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে চিকিৎসা নিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মর্জিনা খাতুন (৮০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে অব্যবস্থাপনার কারণে প্রচন্ড গরমে আগত রোগীরা দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমআর খান মেডিকেল সেন্টার ভবনে বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। সকালে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি।
ক্যাম্পে আগত রোগীরা জানান, যশোর সদরের ইসলামপুর গ্রামের জয়নাল আবেদিন মুন্সীর স্ত্রী মর্জিনা খাতুন (৮০) সকালে যবিপ্রবির মেডিকেল ক্যাম্পে চিকিৎসা সেবা নিতে যান। ঘণ্টাখানেক সময় সেখানে অবস্থানের পর প্রচন্ড গরম ও ভিড়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় যবিপ্রবির অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালে আনার আগেই মর্জিনা খাতুনের মৃত্যু হয়।
যশোর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আহমেদ তারেক শামস্ বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই মর্জিনা খাতুনের মৃত্যু হয়েছে।
মর্জিনা খাতুনের নাতী রাব্বী হোসেন জানান, তার দাদি (মর্জিনা খাতুন) শ্বাসকষ্টজনিত কারণে অসুস্থ ছিলেন। শনিবার তিনি যবিপ্রবির মেডিকেল ক্যাম্পে যান। সেখানে অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর তিনি আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে যশোর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তার আগেই তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, মেডিকেল ক্যাম্পে প্রচন্ড গরম ও অব্যবস্থাপনায় রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আগতরা। রোগীদের অভিযোগ ক্যাম্পে চিকিৎসা নেয়ার জন্য তারা অনেকে সকাল ৯টায় লাইনে দাঁড়ান। প্রচন্ড রোদ-গরমে ভবনের বাইরে লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাইরে রোগীদের জন্য কোনো ছামিয়ানা টাঙানো ও বাতাসেরও ব্যবস্থা করা হয়নি। এজন্য প্রচন্ড ভিড় ও রোদ-গরমে তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। চিকিৎসা নিতে যাওয়া সালমা বেগম (৪০) বলেন, সকাল ৯টায় এসে তিনি লাইন দিয়েছেন। তিন ঘণ্টা হয়ে গেলেও ভেতরে ঢুকতে পারেননি। রোদে বাইরে দাঁড়িয়ে আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। একই এলাকার রোগী রোজিনা খাতুন (৬০) অভিযোগ করেন, গরমে গেটের বাইরে রোগীরা ছটফট করেছে। কিন্তু কেউ খেয়াল করেনি। সবাই অনুষ্ঠান নিয়ে ছুটাছুটি করেছে। সকালে এসে কখন ডাক্তার দেখাতে পারবেন তা নিয়েও তিনি সংশয়ে ছিলেন।
এ ব্যাপারে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. দীপক কুমার মন্ডল জানান, ক্যাম্পে চিকিৎসা নিতে এসে এক নারী অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে যশোর হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি মারা গেছেন বলে শুনেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে কী হয়েছে তা বিস্তারিত জানেন না।
অব্যবস্থাপনা নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অভিযোগের ব্যাপারে ডা. দীপক কুমার মন্ডল বলেন, একসঙ্গে অনেক রোগী আসায় কিছুটা চাপ ছিলো। ভবনের গেটে আটজন চিকিৎসক ছিলেন। তারা প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করেছেন কোন চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হবে। এ জন্য গেটে কিছুটা ভিড় হয়েছে। কিন্তু অব্যবস্থাপনার অভিযোগ সঠিক নয়।
খুলনা গেজেট/কেডি