অভয়নগরে ইউপি মেম্বর নূর আলী (৪৮) খুনের ঘটনায় মামলা হয়নি। নিহতের বড় ছেলে ইব্রাহিম হোসেন (১৬) গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হত্যার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের বিভিন্ন সংস্থা পৃথকভাবে কাজ করছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোমবার ভোর রাতে সন্দেহভাজন দু’যুবককে আটক করা হয়েছে। এলাকায় বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
রোববার রাত ৮টার দিকে শুভরাড়া ইউনিয়নের শুভরাড়া গ্রামের বাবুরহাট নামক স্থানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ইউপি মেম্বর নূর আলী। তিনি ও তাঁর বড় ছেলে অভয়নগর থানা পুলিশ আয়োজিত ৭ মার্চের অনুষ্ঠান শেষে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় তার বড় ছেলে ইব্রাহিম হোসেনও (১৬) গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। নূর আলী উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বর ও ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘদিন ধরে শুভরাড়া ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চরমপন্থী সংগঠন নসোর বাহিনী ও তোরণ বাহিনীর মধ্যে বিবাদ চলছিল। নসোর বাহিনীর কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন নিহত নূর আলী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ওয়ার্ডের এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, তিনদিন পূর্বে শুভরাড়া ইউনিয়নের বাবুরহাট বাজারে লাল্টুর কাপড়ের দোকানে তোরণ বাহিনীর এক নেতার সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয় নূর আলীর। এসময় নূর আলী প্রকাশ্যে ওই নেতার হাত-পা ভাঙাসহ হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। এরই জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরও জানান, হত্যার পর রাতে পুলিশের বিভিন্ন সংস্থা ইউনিয়নব্যাপী অভিযান চালিয়েছে। অভিযানের শেষ পর্যায়ে সোমবার ভোররাতে নাউলী গ্রামের গফ্ফার গাজীর ছেলে একাধিক মামলার আসামি সুলতান গাজী (৩৫) ও একই গ্রামের ইব্রাহিম মোল্লার ছেলে ইসমাইল মোল্লাকে (২৮) পুলিশ আটক করেছে। এলাকাবাসী জানান, যশোর ডিবি পুলিশ তাদেরকে আটক করে নিয়ে গেছে।
যশোর ডিবি পুলিশের ওসি সৌমেন দাস জানান, রাতে শুভরাড়া ইউনিয়নে গেলেও কাউকে আটক করা হয়নি। তবে অন্য কোনো সংস্থা তাকে আটক করেছে কিনা তা আমি জানিনা। নিহতের পরিবার জানায়, পকিল্পিতভাবে নূর আলীকে হত্যা করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ ইব্রাহিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মরদেহ দাফনের পর সোমবার রাতে মামলা করার জানিয়েছিল পরিবারের সদস্যরা।
এ বিষয়ে অভয়নগর থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কাছ থেকে মাথা ও বুকে একটি করে গুলি করা হয়েছে। আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের ছেলের শরীরের একাধিক গুলি লেগেছে। তার চিকিৎসা চলছে। হত্যা রহস্য উদঘাটনে থানা পুলিশ, যশোর ডিবি, পিবিআই ও সিআইডি পৃথকভাবে কাজ করছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো মামলা করা হয়নি। তবে হত্যা রহস্য ও খুনিদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি