আধুনিকায়ন করে পুনরায় চালু হবে-এমন আশ্বাসে ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি নগরীর মুজগুন্নী শিশু পার্কে তালা ঝুলিয়ে দেয় খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। এরপর সাড়ে ৩ বছর পার হয়েছে। পার্ক আধুনিকায়ন হয়নি, তালাও খোলেনি। নগরীর অন্যতম আধুনিক শিশুপার্কটি বন্ধ করে রাখায় বিনোদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিশু-কিশোরেরা। আর কেডিএর ধীরে চলো নীতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নাগরিক নেতারা।
খুলনা মহানগরীতে শিশুদের বিনোদনের জায়গা নেই বললেই চলে। নগরীতে সিটি করপোরেশনের ৮টি পার্ক থাকলেও সেগুলোতে শিশুদের বিনোদনের সুযোগ নেই। এর মধ্যে খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশু পার্ক ছাড়া জাতিসংঘ পার্ক, হাদিস পার্ক, নিরালা ও সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকা পার্ক, সোলার পার্ক সারাদিনই থাকে তরুণ-তরুণী ও পৌঢ়দের দখলে।
এমন অবস্থায় ২০০৭ সালে নগরবাসীর বিনোদনের জন্য মুজগুন্নী আবাসিক এলাকায় ৮ দশমিক ৬৭ একর জমিতে শিশুপার্ক স্থাপন করে কেডিএ। ২০০৭ সালের ১৮ এপ্রিল পার্কের ইজারা গ্রহণ করে এস এস ওয়ার্ল্ড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। নানা ধরনের আধুনিক খেলনা ও মনোরম পরিবেশের কারণে শুরুর দিকে পার্কটি শিশুদের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
কিন্তু ২০০৯ সালের পর থেকেই পার্কের পরিবেশ নষ্ট হতে থাকে। পার্কের ভেতরে অনৈতিক কর্মকান্ড, পার্কের সীমানায় স্থাপনা তৈরি করে ভাড়া দেওয়াসহ নানা অভিযোগে ২০১৯ সালের ২২ জানুয়ারি পার্কের ইজারা বাতিল করে কেডিএ। এর একমাস পর ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে পার্কের ইজারাদারকে উচ্ছেদ করে পার্কে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সেই থেকে পার্কটি বন্ধ রয়েছে।
সরেজমিন পার্কে গিয়ে দেখা গেছে, মূল ফটকে বিশাল আকৃতির ডায়নোসর পার্কের হারানো গৌরব জানান দিচ্ছে। প্রবেশ ফটকে এখনও তালা ঝুলছে। পার্কের ভেতরটা ঘাস ও আগাছায় ভরে গেছে।
কেডিএ থেকে জানা গেছে, পার্কটি ইজারার জন্য ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর দরপত্র আহŸান করে কেডিএ। নির্ধারিত সময়ে কয়েকজন আবেদনও করেন। কিন্তু যোগ্যতা না থাকায় সেই আবেদন বাতিল করা হয়। চলতি বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর ফের ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেয় কেডিএ। ১২ অক্টোবর ছিলো দরপত্রের শেষ দিন। পরে দরপত্র জমার সময় ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এভাবে সময় যাচ্ছে, কিন্তু পার্ক আধুনিকায়ন কাজে গতি আসছে না।
কেডিএর পরিচালক (এস্টেট) মো. বদিউজ্জামান বলেন, মুজগুন্নী পার্কটি আধুনিক খেলনা দিয়ে নতুনভাবে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু পার্ক চালানোর অভিজ্ঞ ইজারাদার পাওয়া যাচ্ছে না। ইজারা দরপত্র আহŸান করা হয়েছে, দ্রæত পার্ক চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।
পার্কের বেহাল দশা সম্পর্কে বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান বলেন, নগরীতে উন্নতমানের শিশু পার্ক ছিলো খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড ও মুজগুন্নী শিশু পার্ক। এর মধ্যে মুজগুন্নী পার্কটি বন্ধ থাকায় শিশুদের বিনোদনের সুযোগ কমে গেছে। ঐ অঞ্চলে আর কোনো পার্ক না থাকায় শিশু-কিশোরসহ সাধারণ মানুষের বিনোদনের কোনো সুযোগ নেই। দীর্ঘদিন পার্ক তালাবদ্ধ অবস্থায় রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রæত পার্কটি উন্মুক্ত করার দাবি জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/ টি আই