খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ পৌষ, ১৪৩১ | ১৩ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  আরও ৬০ দিন বাড়ল সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা
  রমজান ও ঈদের সম্ভাব্য তারিখ জানাল আরব আমিরাত
  দেশে একজনের শরীরে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত : আইইডিসিআর

মালদ্বীপকে ২০ বছর পর হারানোর আনন্দ বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ছিটকে যাওয়ার চোখ রাঙানি ছিল আগে থেকেই। মাঠে নেমে আবার পড়লো পিছিয়ে। চাপ-তাপ বেড়ে করুণ অবস্থা তখন। তবে ভেঙে পড়েনি বাংলাদেশ। হতাশায় মুখ লুকায়নি। বরং ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন গল্প লিখে দোর্দণ্ড প্রতাপ দেখিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়শিপে টিকে থাকলো লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। তাও কোন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে! যাদের বিপক্ষে সাফে ২০ বছর ধরে জয় ছিল না বাংলাদেশের।

রবিবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে মালদ্বীপকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৩ সালের পর এবারই প্রথম দ্বীপ দেশটির বিপক্ষে সাফের লড়াইয়ে জিতলো জামাল ভূঁইয়ারা।

বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও দারুণ ফুটবলে নতুন দিনের গান শোনালো তারা। বিরতিতে যাওয়ার আগমুহূর্তে রাকিব হোসেনের গোলে সমতায় ফেরা, এরপর কাজী তারিকের লক্ষ্যভেদে এগিয়ে যাওয়া এবং সবশেষ শেখ মোরসালিনের দারুণ গোলে স্বস্তির জয়।

ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য বাঁচা-মরার। হারলেই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বিদায়। এমন সমীকরণ সামনে রেখে মালদ্বীপের বিপক্ষে শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে জামাল ভূঁইয়ারা। তাতে ছিটকে যাওয়ার চোখ রাঙানি আরও প্রবল হয়। তবে রাকিব হোসেন আগেই সব শেষ হতে দেননি। তার গোলে সমতায় থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে বাংলাদেশ।

লেবাননের বিপক্ষে সাফের প্রথম ম্যাচে দারুণ প্রতিরোধ গড়েও শেষ রক্ষা হয়নি বাংলাদেশের। হারতে হয়েছে শেষ দিকে। প্রথম ম্যাচে হারতেই সাফ থেকে বিদায়ের বিষাদের সুর শুনতে পায় জামালরা। মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচটি হয়ে দাঁড়ায় কঠিন পরীক্ষার।

বেঙ্গালুরুতে সেই ম্যাচেই ১৮ মিনিটে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ে। হামজা আহমেদের গোলে হতাশায় গ্রাস করে লাল-সবুজ দলের ডাগ আউটে।

গোলে শোধে মরিয়া বাংলাদেশ আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। মালদ্বীপের রক্ষণে চাপ তৈরি করতে থাকে। বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগও তৈরি করে। তবে অ্যাটাকিং থার্ডে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেরায় গোল পাওয়া হচ্ছিল না। এজন্য ভাগ্যকেও দুষতে পারে বাংলাদেশ।

তপু বর্মণের হেড গোললাইন থেকে ফিরে আসে মালদ্বীপের এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে। ফিরতি বল মালদ্বীপেরেই আরেক খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে আবার গোলমুখে। এবার মালদ্বীপের গোলকিপার ঝাঁপিয়ে বল ঠেকাতে হতাশায় মাথায় হাত জামালদের।

তবে খানিক পরে আসে আনন্দের উপলক্ষ। ৪২ মিনিটে রাকিরে চম’কার হেডে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। বাঁ প্রান্ত থেকে সোহেল রানার ক্রস বক্সের ভেতরে হেড করেন তপু। এই ডিফেন্ডার হেড থেকে উড়ে আসা বলেই হেড করে জাল খুঁজে নেন রাকিব।

শেষ পর্যন্ত ওই গোলেই স্বস্তি নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। প্রথমার্ধ শেষে স্কোরলাইন থাকে ১-১ সমতা।

পিছিয়ে পড়া বাংলাদেশ বিরতিতে যাওয়ার আগে সমতায় ফেরে। দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে এসে আরও ধারালো হয় তাদের আক্রমণ। তারই পুরস্কার পেলো লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। কাজী তারিকের গোলে এবার এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

১-১ সমতা নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করা বাংলাদেশ চড়াও হয় মালদ্বীপের ওপর। আক্রমণের পসরা সাজিয়ে ব্যস্ত রাখে প্রতিপক্ষের রক্ষণ। অবশেষ সফল হয় ৬৭ মিনিটে। জটলার ভেতর থেকে গোল করেন তারিক। ছোট বক্সের ঠিক বাইরে থেকে প্রথমে শট করেছিলেন এই ডিফেন্ডার। তবে বল প্রতিহত হয়ে ফিরে আসে আবার তার কাছেই। এবার হেড করে বল জালে জড়িয়ে দেন তারিক।

নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে বিশ্বনাথ ঘোষের পাস থেকে বক্সের ভেতর বল পান মোরসালিন। সামনে ছিলেন প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডার। ডান পায়ে বল নিয়ে প্রথমে ওই ডিফেন্ডারকে বোকা বানালেন এরপর বাঁ পায়ের আড়াআড়ি শটে বলের ঠিকানা করলেন জালে। আর এরই সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের জয়।




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!