অভয়নগরে মশার উপদ্রব বেড়েছে। ফলে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে জনজীবন। দেখা দিয়েছে বিভিন্ন রোগ ব্যাধি। ঘরে-বাইরে, স্কুল-কলেজ, রাস্তা-ঘাট সর্বত্রই বিরাজ করছে এখন মশার রাজত্ব। মশার দাপট আর মশাবাহিত রোগের শঙ্কায় ভুগছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, মশা নিধনে কোনো কার্যক্রম না থাকায় ব্যক্তিগত চেষ্টা আর মশার কামড় খেয়েই জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। পৌরসভার মশা নিধন কার্যক্রম বন্ধের কারণে মশার জীবাণুবাহী রোগের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে এলাকার হাজার হাজার মানুষ। এর মধ্যে মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সর্বোচ্চ শঙ্কায় রয়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা।
পৌরসভার ১,২,৩, ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ডের বসবাসকারী একাধিক ব্যক্তি জানায়, আগে মাঝে মাঝে পৌরসভার উদ্যোগে মশা নিধনের স্প্রে করলেও অনেক দিন হয়েছে এর প্রতিকারের কোনো পদক্ষেপই নেই। তাছাড়া যেখানে সেখানে ময়লা ফেলার কারণে মশার উপদ্রব বেড়েই চলেছে। এর ফলে নওয়াপাড়া পৌর এলাকার দখলদার এখন মশা।
সরেজমিনে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পৌর এলাকায় অধিকাংশ মহল্লাতেই ছড়িয়ে আছে ছোট ছোট ড্রেন, ডোবা-নালা। এসব ড্রেন, ডোবা-নালার ওপর দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ছে মশা।
পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নাজমা বেগম বলেন, সন্ধ্যা নামার পর থেকেই ঘরে মশার উপদ্রব বেড়ে যাচ্ছে। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখলেও মশা কমছে না।
নওয়াপাড়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সাব্বির আহমেদ বলেন, তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে নওয়াপাড়ায় আছেন। কিন্তু এবার মশার উপদ্রব যেন অনেক বেশি। মশার কামড়ে সন্ধ্যা থেকেই অতিষ্ঠ হতে হয়। তাছাড় কয়েল, ধোঁয়া কিছু দিয়েই কোন কাজ হচ্ছে না।
স্টেশন বাজার এলাকার ফাতেমা বেগম বলেন, শুধু রাতে না, দিনেও ঘর একটু অন্ধকার হলেই মশা কামড়াচ্ছে। ফলে অনেক সময় দিনেও মশারি ব্যবহার করতে হচ্ছে। বাড়ছে রোগ ব্যাধী।
নওয়াপাড়া পৌরসভার কনজারভেটিভ ইন্সপেক্টর সেলিম মল্লিক বলেন, মশক নিধক ছিটানোর জন্য পৌরসভায় আলোচনা হয়েছে। এখন টেন্ডারের প্রক্রিয়ায় আছে। বরাদ্দ পেলে মশা নিধক ঔষধ ছিটানো হবে।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, বাড়ির আশেপাশের ফুলের টব, নারকেলের খোসাতে পানি ও ময়লা জমতে দেয়া যাবে না। কারন এসব স্থানে মশার বংশ বৃদ্ধি ঘটে। আমরা মশা তাড়াতে বিভিন্ন কয়েল বা অ্যারাসল ব্যবহার করে থাকি। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
তিনি আরও বলেন, এক্ষেত্রে পৌরসভা বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তারা ফগার মেশিনের সাহায্যে মশা নিধন করতে পারে। পৌরসভার মেয়র সুশান্ত কুমার দাস শান্ত বলেন, আমরা মশা নিধনের লক্ষ্যে খুব শিগগিরই পদক্ষেপ নিচ্ছি। এছাড়া মশা নিধনের জন্য অল্প সময়ের মধ্যে টেন্ডারের আহবান করা হচ্ছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবছর নওয়াপাড়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মশা নিধনে অধিক কার্যকরী মেডিসিন সংগ্রহের চেষ্টা করছে।
খুলনা গেজেট /এমএম