যশোরের মণিরামপুরে চিকিৎসকের প্রাইভেট কারের ধাক্কায় সাইকেল চালক রবিউল ইসলাম (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনগন প্রাইভেট কার আটক করে চালক-আরোহীদের পুলিশে সোপর্দ করেছে। শুক্রবার যশোর-চুকনগর সড়কের মণিরামপুর উপজেলার আমিনপুরের বকুলতলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবক উপজেলার জামলা আমিনপুর গ্রামের চারা ব্যবসায়ী মশিয়ার রহমানের ছেলে। তিনিও নার্সারির ব্যবসা করতেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিল্লাল হোসেনসহ এলাকাবাসী জানান, দুর্ঘটনার আগ মুহূর্তে রবিউল ইসলাম সাইকেল চালিয়ে চিনাটোলা বাজার থেকে মাংস কিনে জামলা গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে বকুলতলা মসজিদের সামনে সাইকেল নিয়ে মেইন সড়ড় পার হয়ে পূর্বপাশে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় পেছন দিক থেকে আসা একটি প্রাইভেট কার তাকে ধাক্কা দেয়। এতে রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান রবিউল ইসলাম। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। স্থানীয়রা আরও বলেন, রবিউল ইসলামকে ধাক্কা দেওয়ার পরই প্রাইভেট কারের ভেতরে থাকা তিন আরোহী নেমে আসেন। আমরা জানতে পেরেছি, কারের ভেতরে থাকা তিনজনের মধ্যে একজন চিকিৎসক হুমায়ুন কবির, তার স্ত্রী ও ছেলে ছিল।
শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি বলেন, দুর্ঘটনার পরই স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠে। তখন পুলিশ এসে কারটি (ঢাকা মেট্রো ঘ-২১-৯৪১৭) ও চালককে হেফাজতে নিয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তন্ময় বিশ্বাস বলেন, কারের ধাক্কায় আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনার পর আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। আর জানতে পেরেছি প্রাইভেট কারটি খুলনা আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের কিডনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হুমায়ুন কবিরের। দুর্ঘটনার সময় তিনি গাড়িতে ছিলেন।
মণিরামপুর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) কানু দত্ত বলেন, ডাক্তার কবির নিজেই প্রাইভেট কার চালাচ্ছিলেন। দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি মিটিয়ে নিয়েছেন। এখনও কোন মামলা হয়নি।
শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর হোসেন বলেন, রবিউল ইসলামকে ধাক্কা দেওয়া প্রাইভেট কারের মালিক খুলনা আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের কিডনি চিকিৎসক হুমায়ুন কবির। দুর্ঘটনার সময় তিনি গাড়িতে ছিলেন। রবিউল ইসলামের তিন ছেলে মেয়ে রয়েছে। ডাক্তার কবির তাদের পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। নিহতের স্বজনেরা মামলায় যাচ্ছেন না। আমরা বিষয়টি মিটমাট করে নিয়েছি।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ মৃত্যুর ঘটনাটি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় কেউ কোন অভিযোগ এখনও করেনি। অভিযোগ করলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/কেডি